সীমান্ত চুক্তি কার্যকর হলে রাজ্যেরই লাভ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মনে করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত চুক্তি কার্যকর হলে আসামের ক্ষতি হবে মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে রাজ্যটিই লাভবান হবে। আসামের স্বার্থের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
রোববার আসামের প্রধান শহর গৌহাটিতে বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে দেয়া বক্তৃতায় মোদি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি আসামে বাংলাদেশীদের কথিত অনুপ্রবেশের কড়া সমালোচনা করেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়, অপদখলীয় ভূমি হস্তান্তর এবং অচিহ্নিত স্থল সীমান্ত চিহ্নিত করার মাধ্যমে সই হওয়া সীমান্ত চুক্তি কার্যকর করতে ভারতের পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হতে হবে। এ লক্ষ্যে পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হবে। বর্তমানে ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও সেখানে কংগ্রেস সমর্থন দেবে বলে ধারণা করা যায়। কারণ ভারতে বিগত সরকারের আমলে তৎকালীন ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এই বিল উত্থাপন করে। তখন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সম্মতি থাকলেও দলটির আসাম ইউনিট এই চুক্তির বিরোধিতা করেছিল।
সীমান্ত চুক্তি ইতিমধ্যে ভারতের পার্লামেন্টে শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে অনুমোদিত হয়েছে। পার্লামেন্টের চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই এটি পাস হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শীতকালীন অধিবেশন ডিসেম্বরের প্রায় পুরো সময় ধরে চলবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আসামে বিজেপি নেতাদের আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা প্রতিদিনই অবৈধভাবে ঢুকে আসামকে ধ্বংস করছে। আমি এমন একটা ব্যবস্থা করব যাতে আসামে অনুপ্রবেশের সব কটি রুট বন্ধ হয়ে যায়।
গত মে মাসে ভারতে নির্বাচনের পূর্বে নরেন্দ্র মোদি তার ভাষায় বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কথিত অনুপ্রবেশকারীদের বের করে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এখন তিনি দৃশ্যত সীমান্ত চুক্তিকে অনুপ্রবেশ ইস্যু নিষ্পত্তির অংশ এবং উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন।
বিজেপি আমলেও চমৎকার সম্পর্ক অব্যাহত : আসামে নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য রাখার সময়ে ঢাকায় একটি সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের সঙ্গেও শেখ হাসিনার বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউট (বিইআই) রোববার গুলশানের একটি হোটেলে এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনার আয়োজনে সহায়তা দিয়েছে ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) এবং ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন আর তার কন্যা শেখ হাসিনা তা রক্ষা করেছেন। তার এই মন্তব্যেই বাংলাদেশ ও এ দেশের সরকারের প্রতি মোদির ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট হয়েছে। বিদ্যমান সম্পর্ককে অতিউচ্চ মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার সদিচ্ছাও অবিস্মরণীয় ব্যাপার।

No comments

Powered by Blogger.