যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কেউ থামাতে পারবে না: আশরাফ

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অপরাধীদের দণ্ড কেউ থামাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। আজ সোমবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে। অনেকের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আশা করি সব রায় কার্যকর হবে। যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কেউ থামাতে পারবে না।’ তিনি বলেন, ‘অনেক সময় মনে হয়, মুক্তিযুদ্ধ করাটাই ছিল অপরাধ। এত বড় যুদ্ধ, এত বড় আত্মত্যাগ। অথচ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলে। এ দেশের স্বাধীনতা আলোচনা বা গোলটেবিলের মাধ্যমে আসেনি। পৃথিবীর খুব কম জাতিই আছে, যারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। নতুন প্রজন্মকে এ ইতিহাস জানাতে হবে।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দুঃখ হয়। স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা শক্তিশালী। তারা দিনে দিনে শক্তি সঞ্চয় করছে। আর আমরা ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছি। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি, আমাদের কাজ হবে তরুণ প্রজন্মকে এই ইতিহাস জানানো।’
এর আগে সৈয়দ আশরাফ জাতীয় পতাকা, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মুর্শেদ খান (বীর বিক্রম)। বক্তব্য দেন সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন, মহাসচিব মো. আলাউদ্দিন, কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী, ঢাকা মহানগর কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি আমির হোসেন মোল্লা প্রমুখ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে এ পর্যন্ত ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন জামায়াতের সাবেক সদস্য আবুল কালাম আযাদ, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আলবদর কমান্ডার চৌধুরী মুঈনুদ্দিন ও আশরাফ উজ জামান খান, জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলী, ফরিদপুর নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র জাহিদ হোসেন খোকন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক হোসেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জন ট্রাইব্যুনালের রায়ে আর কাদের মোল্লা আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে কাদের মোল্লার। আর কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগ বহাল রেখেছেন।

No comments

Powered by Blogger.