সমকামিতায় লিপ্ত না হওয়ায় স্কুলছাত্র জুবায়েরকে হত্যা করা হয় -আটক বিদেশী নাগরিকের স্বীকারোক্তি

সমকামিতায় লিপ্ত না হওয়ায় রাজধানীর উত্তরায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ‘ও’ লেভেলের ছাত্র জুবায়ের আহমেদকে হত্যা করেছে বিদেশী নাগরিক আবু ওবায়েদ কাদের (৪৬)। ফুটবল প্রশিক্ষক আলজেরিয়ার এই নাগরিক পানিতে চুবিয়ে জুবায়েরকে হত্যা করে। এ ঘটনা জুবায়েরের বন্ধু ইসমাইল দেখে ফেললে তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন ও হুমকি দেয় কাদের। যে কারণে সে বন্ধু ইসমাইল হত্যার ব্যাপারে মুখ খোলেনি। আবু ওবায়েদ কাদের রিমান্ডে পুলিশের কাছে এসব কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি শেখ নাজমুল আলম। গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিসি শেখ নাজমুল আলম এ কথা জানান। নাজমুল আলম বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, গত ৪ অক্টোবর বিকেল ৫টার পরে প্রশিক কাদের, জুবায়ের ও আরো কয়েকজন উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের মাঠে ফুটবল খেলে। খেলা শেষে কাদের, জুবায়ের ও ইসমাইল মাঠের পাশের পুকুরে গোসল করতে নামে। এ সময় প্রশিক কাদের জুবায়েরকে জড়িয়ে ধরে সমকামিতায় লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করে। এতে জুবায়ের বাধা দিলে তাকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে সেখানে লাশ ডুবিয়ে দেয়। বিষয়টি ইসমাইল পুকুর পাড় থেকে দেখে ফেলায় তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখায় ও বিষয়টি প্রকাশ না করার হুমকি দেয়। তিনি জানান, জুবায়ের ওই দিন রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজা শুরু করে। পরের দিন সকাল ৬টার দিকে আলজেরীয় নাগরিক আবু ওবায়েদ কাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার কথায় অসংলগ্নতা পাওয়া যায়। পরিবারের সন্দেহ হলে তারা জুবায়েরের বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কাদের জুবায়েরের লাশ পুকুরে আছে বলে জানায়। পরে সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। ডিসি শেখ নাজমুল জানান, মূলত কাদের একজন সমকামী। সে  পাসপোর্টবিহীন অবস্থায় দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে। সে কিশোরদের ফুটবল প্রশিণের নামে তাদের সাথে সখ্য গড়ে তোলে এবং তাদের সমকামিতায় বাধ্য করে থাকে। তার ফেসবুক ও মোবাইলফোনে সমকামিতার যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ঈদের আগের দিন রোববার দুপুরে উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের পার্ক কল্যাণ সমিতির মাঠের পাশের পুকুর থেকে জুবায়েরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। তার আগের দিন শনিবার থেকে সে নিখোঁজ ছিল। শনিবার বিকেলে এলাকায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়। এতে খেলতে যায় জুবায়ের। সাধারণত সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সে বাসায় ফিরলেও ওই দিন আর তার ফেরা হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.