আওয়ামী লীগকে 'মৃত্যুদণ্ড' দেওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুন by আবদুল মান্নান

বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসে যে কজন চরম ঘৃণিত ব্যক্তি আছেন তার মধ্যে রয়েছে বাংলার নবাব সিরাজুদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মীর জাফর আর জামায়াতের এক কালের আমির মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য সদ্য ৯০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত গোলাম আযম।
মীর জাফর নবাব সিরাজুদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি ছাড়াও তার নিকটাত্মীয় ছিলেন কিন্তু ইংরেজদের সঙ্গে ঐতিহাসিক পলাশীর যুদ্ধের সময় তাঁর অধীনন্থ বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। সেই যুদ্ধে শুধু নবাব সিরাজুদ্দৌলা ইংরেজদের হাতে পরাজিতই হননি, একই সঙ্গে প্রায় দুই শত বছরের জন্য বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য ইংরেজরা মীর জাফরকে বাংলার একজন সাক্ষিগোপাল নবাব বানিয়েছিল ঠিক কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা পুরো বাংলাকে গ্রাস করেছিল। মীর জাফর কুষ্ঠ রোগে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। মুর্শিদাবাদের যে স্থানে মীর জাফরকে কবর দেওয়া হয়েছে, সেই স্থানটির স্থানীয় নাম নিমকহারামতলা। বাংলার আর এক ঘৃণিত ব্যক্তি জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম একাত্তর-পূর্ববর্তী সময়ে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির ছিলেন। একাত্তরের ২৬ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এক রাতেই কয়েক লাখ বাঙালিকে হত্যা করার পর পরিস্থিতি একটু শান্ত হয়ে এলে এপ্রিল মাসের ৪ ও ৬ তারিখ গোলাম আযম ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা সদলবলে গিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক কসাই হিসেবে খ্যাত টিক্কা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই অঙ্গীকার করে আসেন যে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য তাঁরা তাঁদের সর্বশক্তি নিয়োগ করবেন। তাঁরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ইসলাম ধ্বংস করার একটি ভারতীয় নীলনকশা হিসেবে প্রচার করেছিলেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের দুষ্কৃতকারী ও ইসলামের দুশমন আখ্যা দিয়ে তাদের যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানে খতম করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। জামায়াত আর ইসলামী ছাত্র সংঘের (বর্তমানে ছাত্রশিবির) নেতা গোলাম আযম, নিজামী, মুজাহিদদের নেতৃত্বে বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহায়ক শক্তি হিসেবে গড়ে উঠেছিল আলবদর, আলশামস, মুজাহিদ বাহিনী নামক বিভিন্ন আধা সামরিক বাহিনী, যাদের প্রধান দায়িত্বই ছিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৯ মাসে বাংলাদেশে গণহত্যা পরিচালনায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহায়তা করা। আবার আলবদর বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব ছিল দেশের বুদ্ধিজীবী হত্যা। এই বাহিনীতে ভর্তি করা হতো শুধু ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্যদের। এদের কাজই ছিল বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে এ দেশকে মেধাশূন্য করা।
দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে গোলাম আযমসহ অনেক ঘাতকই দেশ থেকে পালিয়ে যায়, আবার অনেকে চলে যায় আত্মগোপনে। বঙ্গবন্ধু সরকার গোলাম আযমসহ অনেকের নাগরিকত্ব বাতিল করে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর জিয়া ক্ষমতা দখল করে গোলাম আযমকে পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসতে দেন এবং ১৯৯১ সালে এই ঘাতক শিরোমণিকে বাংলাদেশ জামায়াত তাদের আমির নির্বাচিত করে। এমন একটি অভাবনীয় ঘটনার পর শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গোলাম আযমসহ একাত্তরের ঘাতকদের বিরুদ্ধে এক তীব্র গণ-আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই গণ-আন্দোলনের একটাই লক্ষ্য, গোলাম আযমসহ একাত্তরের সব ঘাতকের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি চাই। সেই গণ-আন্দোলনের মাঝপথে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং শহীদ জননীসহ যাঁরা এই গণ-আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তাঁদের মধ্যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা হয়। সেটি তখন বেগম জিয়ার প্রথম শাসনকাল।
জেনারেল জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত করার নামে নিষিদ্ধ জামায়াতকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার অনুমতি দিয়েছিলেন। গোলাম আযম জেনারেল জিয়ার স্ত্রী বেগম জিয়ার শাসনামলে একজন বিদেশি নাগরিক হয়েও বাংলাদেশে জামায়াতের আমির হয়েছিলেন। বিএনপি জামায়াতের রাজনীতিকে শুধু প্রসার ঘটাতে সাহায্যই করেনি, তাদের ক্ষমতার অংশীদারও করেছে, একাত্তরের ঘাতকদের জিয়া ও তাঁর স্ত্রী বেগম জিয়ার মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দিয়েছেন। সুতরাং তাদের কাছ থেকে এই একাত্তরের ঘাতকদের বিচার আশা করা নিছক বাতুলতা ছাড়া আর কিছুই নয়। বিচারপ্রার্থী মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল একটি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি তথা আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় আসা এবং তা যদি সম্ভব হয়, তাহলে তারা এই ঘাতকদের বিচার শুরু করবে। অনেকে হয়তো বলবেন আওয়ামী লীগ ছাড়া কি দেশে আর কোনো দল স্বাধীনতার শক্তি নয়? নিশ্চয় আরো অনেক দল আছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি, সংগঠন বা শক্তি প্রয়োজন, তা এখন পর্যন্ত তারা অর্জন করতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ একুশ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে স্বাভাবিকভাবে তাদের অন্যতম এজেন্ডা ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার করা, যা তারা শুরু করেছিল কিন্তু শেষ করে যেতে পারেনি। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে নানা অজুহাতে সে বিচারকাজ বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে ঘোষিত ইশতেহারে আওয়ামী লীগ অঙ্গীকার করে- নির্বাচনে বিজয়ী হলে তারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার সমাপ্ত করবে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ শুরু করবে। তারা তাদের কথা রেখেছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ শেষ করে বিচারের রায় বাস্তবায়ন করেছে এবং কিছুটা দেরিতে হলেও ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের ঘাতকদের বিচারকাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে গোলাম আযমসহ ছয়জনের বিচারকাজ শেষ করে বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে আর যার বিচারের রায়ের প্রতি সারা দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে তাকিয়ে ছিল সেই গোলাম আযমের রায় গত সোমবার ঘোষিত হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আনা হয়েছে, তার সবই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত এবং প্রতিটির শাস্তি মৃত্যুদণ্ডযোগ্য; কিন্তু তাঁর বয়স এবং শারীরিক অবস্থা বিচার করে তাঁকে নব্বই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো। এই রায়ে প্রত্যাশিতভাবেই দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক নেটওয়ার্কে তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সামাজিক নেটওয়ার্কে অসংখ্য প্রতিক্রিয়ার মধ্যে একটি প্রতিক্রিয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হয়েছে, যাতে লেখা ছিল 'গোলাম আযমের নব্বই বছর কারাদণ্ড আর আওয়ামী লীগের মৃত্যুদণ্ড।' বোঝা যায়, যিনি এই মন্তব্যটি পোস্ট করেছেন, তিনি চরম হতাশার মধ্যে তা করেছেন। কারণ অনেকের মতো তিনিও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের ওপর আস্থা রেখেছিলেন। তবে তিনিও অনেকের মতো সরকার আর ট্রাইব্যুনালকে এক করে ফেলেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার জন্য জামায়াত কোটি কোটি ডলার খরচ করেছে, আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করেছে, তার সঙ্গে ছিল বিদেশি চাপ। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিও এই ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং বলেছে এটি একটি সরকারের আজ্ঞাবাহী ট্রাইব্যুনাল। বেগম জিয়া প্রকাশ্যে জনসভায় বলেছেন, ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে বিরোধী দলের নিরীহ নেতাদের নিশ্চিহ্ন করার নীলনকশা বাস্তবায়নের কাজ চলছে। তারা ক্ষমতায় এলে আসল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। তারা শুধু এটা বলতে বাকি রেখেছেন, তারা ক্ষমতায় এলে যারা এই যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করছেন তখন তাদের বিচার হবে। সুতরাং আশঙ্কাটা এখানেই। বিএনপি ভ্রান্তভাবে মনে করে জামায়াতের সমর্থন ছাড়া তাদের ক্ষমতায় যাওয়া দুরূহ। অনেকের মতে, আওয়ামী লীগও সময় সময় নিজের সক্ষমতার ওপর আর সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে পারে না এবং এ কারণেই অনেক সময় হেফাজতের মতো একটি মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণার দলের সমর্থনের ওপর তারা ভরসা করে। আগামীতে বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তখন তারা রাষ্ট্রপতিকে দেয় ক্ষমতা বলে যদি এই দণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা মওকুফ করে দেয় অথবা রায় কার্যকর না করে, তাহলে এই দীর্ঘ চল্লিশ বছরের অপেক্ষার পালা তো আর শেষ হবে না। মনে রাখতে হবে, নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে বেগম জিয়ার ২০০১-০৬ মেয়াদের শাসনামলে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকার্য বন্ধ করে রেখেছিলেন।
ট্রাইব্যুনাল রায় দেওয়ার সময় গোলাম আযমের বয়স ও শারীরিক অবস্থাকে বিবেচনা করেছে। গোলাম আযমের বাহিনী যখন একাত্তরে নিরপরাধ মানুষ হত্যা করেছিল, তখন এসব বিষয় তাদের বিবেচ্য ছিল না। তাদের একমাত্র বিবেচ্য বিষয় ছিল এরা জাতে বাঙালি, ধর্মে হিন্দু, বিশ্বাসে আওয়ামী লীগ অথবা মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক। সুতরাং এরা পাকিস্তান ও ইসলামের শত্রু এবং তাদের হত্যা করতে হবে। বর্তমান বিশ্বে একানব্বইটি দেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর আছে, যার মধ্যে ১০টি দেশে বয়সের কারণে এই দণ্ড কার্যকর করা হয় না। এই ১০টির মধ্যে বাংলাদেশ নেই। এই ব্যাপারে একজন সিনিয়র আইনজীবীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতের একটি নিজস্ব অন্তর্নিহিত (inherent power) আছে, যা এই ক্ষেত্রে সম্ভবত ব্যবহার হয়েছে। আবার অনেক সিনিয়র আইনজীবীকে বিভিন্ন টিভি টক শোতে বলতে শুনেছি এই ক্ষমতা কোনো একটি ফৌজদারি মামলায় বিচার্য হতে পারে, গোলাম আযমের ক্ষেত্রে নয়। কারণ তাঁর বিচার কোনো ফৌজাদারি আইনের অধীনে হচ্ছে না। এটি দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং গণহত্যার অপরাধে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এবং বিশেষ আইনে বিচার হচ্ছে। আমরা যারা আইনের এই সব সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বুঝি না, তাদের জন্য এই বিষয়টা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা থাকা উচিত। হয়তো পূর্ণ রায় প্রকাশিত হলে তখন তা জানা যাবে।
তবে এই গোলাম আযমের রায়ে কিছু গুরুতপূর্ণ প্রাপ্তি তো অবশ্যই আছে। এত দিন গোলাম আযম নিজেকে সব সময় নির্দোষ দাবি করতেন এবং বলতেন একাত্তরে তিনি যা করেছেন ঠিক করেছেন। তিনি তা আর বলতে পারবেন না। ট্রাইব্যুনাল তাঁর রায়ে বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনীত প্রতিটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত এবং তাঁর দল জামায়াত ও ছাত্র সংঘ (বর্তমানে ছাত্রশিবির) অপরাধী সংগঠন। এমন মন্তব্য এর আগের রায়গুলোতেও আদালত বলেছেন। সুতরাং যে দল এবং তার অঙ্গসংগঠন উচ্চ আদালতের রায়ে অপরাধী সংগঠন, সে রকম সংগঠন কিভাবে একটি স্বাধীন দেশে রাজনীতির নামে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাতে পারে? সরকারকে এ ব্যাপারে কোনো সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গোলাম আযম আর কাদের মোল্লার রায়ের পর স্বাভাবিক কারণে শুধু মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক নয়, আওয়ামী লীগের অনেক সমর্থকই দারুণভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। অনেকে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে তাঁরা কাউকে ভোট দিতে যাবেন না। এতে বিএনপি-জামায়াত নিঃসন্দেহে বেশ খুশি হবে। তবে ৪২ বছর পর এই মামলা যে শুরু হয়েছে তার জন্য তো বতর্মান সরকার তার প্রাপ্য কৃতিত্বটুকু আশা করতে পারে। এই সরকারের মেয়াদ আর বেশি দিন নেই। এই সময়ের মধ্যে রায়গুলো কার্যকর হবে বলে সবাই প্রত্যাশা করে। সংসদে প্রধানমন্ত্রীও তা বলেছেন। না হলে আবার নতুন বিতর্কের জন্ম হবে। সামনে কখনো বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে যদি এই বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তাহলে তার দায়দায়িত্ব তাদেরকেই নিতে হবে। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। বুধবার জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও একাত্তর সালের আলবদর বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এতে জাতি নিশ্চিতভাবে সন্তুষ্ট হয়েছে। আর সামাজিক নেটওয়ার্কে রায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে যিনি আওয়ামী লীগকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন সেটি নির্ধারণ করার দায়িত্ব জনগণের আর নিঃসন্দেহে তিনিও জনগণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে আশা থাকবে, তিনি ও তাঁর মতো অনেকেই তাঁদের আগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন। গোলাম আযমের কৌঁসুলিরা তাঁর মৃত্যুদণ্ড ঠেকিয়েছেন এখন দেখার পালা আওয়ামী লীগের কৌঁশলীরা তাঁদের দলের মৃত্যুদণ্ড কিভাবে ঠেকান।

লেখক : সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

No comments

Powered by Blogger.