দুই বছর পর দুই কোরিয়ার সংলাপ-বুধবার মন্ত্রী পর্যায়ের সংলাপ হতে পারে

দুই বছরেরও বেশি সময় পর গতকাল রবিবার প্রথমবারের মতো উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সরকারি পর্যায়ে সংলাপ হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে উত্তর কোরিয়ার চালানো তৃতীয় দফা পরমাণু পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট যুদ্ধ-পরিস্থিতির মধ্যে এ বৈঠক হলো।
আশা করা হচ্ছে, সংলাপের মধ্য দিয়ে কোরীয় উপদ্বীপে স্থিতাবস্থা ফিরবে।
দুই দেশের অসামরিক সীমান্ত এলাকার পানমুনজম গ্রামে গতকাল স্থানীয় সময় সকালে সরকারি কর্মকর্তা পর্যায়ের এ বৈঠক হয়। কোরিয়া যুদ্ধের (১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল) পর এ পানমুনজমেই দুই দেশের মধ্যে অস্ত্রবিরতি সই হয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন (দুই কোরিয়ার মধ্যে সুসম্পর্ক রক্ষাবিষয়ক) মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিম হুয়াং-সিওক জানান, গতকালের বৈঠকে সম্ভাব্য উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। গতকাল বিকেলেই উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় দফা প্রস্তুতিমূলক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
প্রাথমিকভাবে আগামী বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার আশা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ২০০৭ সালের পর সেটিই হবে দুই কোরিয়ার মন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম বৈঠক। ওই সংলাপে দুই কোরিয়ার যৌথ শিল্পাঞ্চল কিয়াসং পুনরায় চালুসহ পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়ন ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা হওয়ার কথা। চলমান উত্তেজনার মধ্যে গত এপ্রিলে কিয়াসং বন্ধ করে দেয় পিয়ংইয়ং (উত্তর কোরিয়ার রাজধানী)। বুধবারের বৈঠকে কুমগ্যাং পাহাড় ঘিরে তৈরি পর্যটনকেন্দ্র ফের খুলে দেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হওয়ার আশা করা হচ্ছে। ২০০৮ সালের জুলাইয়ে উত্তর কোরীয় এক সেনার গুলিতে দক্ষিণ কোরিয়ার এক পর্যটক নিহত হওয়ার জেরে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। কিয়াসং ও এই পর্যটনকেন্দ্র পিয়ংইয়ংয়ের রাজস্ব আদায়ের বড় দুই খাত।
দুই দেশের সম্পর্কের শেষ চিহ্ন হিসেবে বিবেচিত কিয়াসং সচল রাখার প্রশ্নে আলোচনায় বসতে পিয়ংইয়ংকে এর আগে একাধিকার প্রস্তাব দিয়েছিল সিউল। তবে প্রতিবারই তা প্রত্যাখ্যান করে পিয়ংইয়ং। তবে গত বৃহস্পতিবার আচমকা এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়ে সংলাপের প্রস্তাব দেয় পিয়ংইয়ং। সিউলও তাতে ইতিবাচক সাড়া দেয়। এরই ভিত্তিতে গতকালের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। এর আগে শুক্রবার সিউলের সঙ্গে যোগাযোগের 'হট লাইন' ফের চালু করে পিয়ংইয়ং। চলমান উত্তেজনার জেরে গত মার্চ থেকে সেটিকে বিচ্ছিন্ন রেখেছিল তারা। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.