পাবনায় আবাসন-সংকটে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী

পাবনায় বড় ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ১২টি। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪২ হাজার। তাঁদের মধ্যে ১০ হাজার শিক্ষার্থী জেলা শহর ও আশপাশে নিজের বাড়িতে থাকেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবাসনসুবিধা পান দুই হাজার।
বাকি প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে থাকতে হয় বিভিন্ন মেসে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন অনুযায়ী আবাসিক ব্যবস্থা না থাকায় তাঁরা বাধ্য হয়ে মেসে থাকছেন। অধিকাংশ মেসেই নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। অনেক সময় অনিচ্ছা সত্ত্বেও যোগ দিতে হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মিছিল ও সভা-সমাবেশে।
জেলা শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে জেলা শহরের বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ, পাবনা কলেজ, পাবনা সিটি কলেজ ও পাবনা আদর্শ মহিলা কলেজে কোনো আবাসনব্যবস্থা নেই।
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও পাবনা মেডিকেল কলেজে আবাসিক ব্যবস্থা থাকলে তা-ও প্রয়োজনের চেয়ে খুবই কম। জেলার সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ২২ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য ছাত্রাবাস রয়েছে তিনটি ও ছাত্রীনিবাস দুটি। এতে আবাসনসুবিধা পাচ্ছেন ৫৩৯ জন। কলেজের তিনটি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে জেলার কাশিনাথপুর, সুজানগর ও চাটমোহর এলাকা থেকে প্রতিদিন গাদাগাদি করে আনা-নেওয়া করা হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে।
জেলা শহর ও আশাপাশে নিজস্ব বাড়ি রয়েছে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর। বাকি প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী থাকছেন বিভিন্ন মেসে। কলেজের অধ্যক্ষ নাঈদ মো. শামসুল হুদা বলেন, শিক্ষার্থীর তুলনায় আবাসনব্যবস্থা খুবই কম। নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণের জন্য বহুবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো বরাদ্দ আসেনি। পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। এখানে ৫০ আসনের একটি ছাত্রীনিবাস ও ১৫০ আসনের সিটের একটি ছাত্রাবাস রয়েছে। দুটি ভবনই অনেক পুরোনো হওয়ায় ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যেই কিছু শিক্ষার্থী অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেখানে থাকছেন। কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী বলেন, কলেজের নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে দুই হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর অধিকাংশ জেলা শহরের বাইরের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের আবাসনের জন্য কলেজে কোনো ব্যবস্থা নেই। কলেজের অধ্যক্ষ মো. রিজাউল ইসলাম বলেন, একটি ছাত্রাবাস ছিল। সেটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ভেঙে ফেলা হয়েছে। নতুন ছাত্রাবাসের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। সরকারি মহিলা কলেজের এক হাজার ৫২২ জন শিক্ষার্থীর জন্য ছাত্রীনিবাস রয়েছে একটি। সেখানে ৮০টি আসন থাকলেও গাদাগাদি করে প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী থাকছেন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আরেকটি ছাত্রীনিবাস খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.