নি র্বা চ ন বি চি ত্রা

নির্বাচন কেন মঙ্গলবার হয়? প্রতি চার বছর পর নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ স্থির হয় ১৮৪৫ সালে। ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি ওই সময়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল


একটি কৃষিপ্রধান দেশ। ঘোড়ায় টানা গাড়িতে করে নিকটতম ভোটকেন্দ্রে যেতে অনেক সময় লেগে যেত কৃষকদের। খামারে শনিবার ছিল কাজের দিন। রোববার ধর্মকর্ম। বুধবার আবার হাটবাজারের দিন। কাজেই বাকি রইল মঙ্গলবার।

নেভাদায় সব প্রার্থীকেই নাকচ করা যায়
নেভাদা অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা ‘এই প্রার্থীদের কাউকে না’ ঘরে টিক দিতে পারেন। নেভাদায় ১৯৭৬ সাল থেকে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ২০১০ সালের একটি আসনের সিনেট নির্বাচনে ২ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার ‘কাউকে না’ ভোট দেন। সে আসনের সিনেটর ছিলেন ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হ্যারি। শেষ পর্যন্ত তিনিই পুনর্নির্বাচিত হন।

নির্বাচনে হেরেও হোয়াইট হাউসে
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে চারবার কম ভোট পাওয়া প্রার্থী প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিশেষ পদ্ধতিই এর কারণ। প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যার ভিত্তিতে না হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে। প্রতিটি রাজ্যে জনসংখ্যার ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্টসংখ্যক নির্বাচকমণ্ডলী বা ইলেকটোরাল কলেজ থাকে। যে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সংশ্লিষ্ট রাজ্যে সাধারণ ভোটারদের বেশি ভোট পান, ওই রাজ্যের সবগুলো ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তিনিই পান। একে বলে ‘উইনার টেক অল’ পদ্ধতি। ইলেকটোরাল কলেজ সদস্যরা পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন। ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট যিনি পাবেন, তিনিই প্রেসিডেন্ট হন। একেবারে সাম্প্রতিককালে ২০০০ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাল গোরের চেয়ে পাক্কা ৫ লাখ ভোট কম পেয়েও ২৭১টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট হন।

দুই প্রার্থী সমান হয়েগেলে
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী দুই প্রার্থীর পাওয়া ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা সমান হয়ে গেলে (অঙ্কের হিসাবে তা সম্ভব) বিষয়টি কংগ্রেসের ৪৩৫ সদস্যের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাঠাতে হবে। প্রতিনিধি পরিষদে এখন রিপাবলিকানদের প্রাধান্য। এই নির্বাচনেও তা বদলাবে সে সম্ভাবনা কম। সুতরাং ভোটাভুটি হলে প্রতিনিধি পরিষদ নিশ্চয়ই রমনিকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবে। কিন্তু সংবিধানের সেই একই ধারা অনুসারে উচ্চকক্ষ সিনেট ভাইস প্রেসিডেন্ট করবে জো বাইডেনকে। বাইডেন তখন পদে পদে প্রেসিডেন্ট রমনিকে আটকানোর চেষ্টা করতে পারেন।

নিবন্ধন না করেও ভোটার!
যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র যে অঙ্গরাজ্যে নিবন্ধিত না হয়েও ভোট দেওয়া যায়, তা হচ্ছে নর্থ ডাকোটা। উনিশ শতকে অন্যতম প্রথম অঙ্গরাজ্য হিসেবে ভোটার নিবন্ধন চালু করলেও নর্থ ডাকোটা ১৯৫১ সালে তা বাতিল করে। এই অঞ্চলের গ্রামীণ চরিত্র ও অধিবাসীদের পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাই এর কারণ। নির্বাচনী কেন্দ্রগুলো ছোট হওয়ায় কর্মকর্তারা সব ভোটারকেই চেনেন। কর্মকর্তারা না চিনলে অবশ্য ভোট দিতে ইচ্ছুক নাগরিককে নিজের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।
 মাহফুজার রহমান

No comments

Powered by Blogger.