বিএনপি থেকে আ.লীগে যোগদান নিয়ে সংঘর্ষ, একজন নিহত

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত ও নয়জন আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম রাশেদ মিয়া (৩০)। তিনি ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক।


রাজানগর ইউনিয়নের রানীরহাটে গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক দফায় এই সংঘর্ষ হয়।
এলাকাবাসী জানান, বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের ইসলামপুর ইউনিয়ন শাখার নেতা মো. ইলিয়াসের নেতৃত্বে দলটির ৫০-৬০ জন নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দিতে শনিবার সন্ধ্যায় রানীরহাটে যান। সেখানে তাঁরা রাজানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা জব্বার জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে গিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের জন্য শপথ নেন। ইলিয়াসের আওয়ামী লীগে যোগদানের বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তাঁর পুরোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের তৌহিদুল ইসলাম। তাই তৌহিদুল ইসলাম তাঁর সহযোগীদের নিয়ে রানীরহাটে এসে ইলিয়াসের নেতৃত্বে যোগদান করতে আসা বিএনপি ও যুবদল কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। তারা এ সময় কুপিয়ে খালেদ নামে এক ব্যক্তিকে আহত করে।
এরপর রাত নয়টায় ইলিয়াস সংগঠিত হয়ে তাঁর দলবল নিয়ে তৌহিদুলের সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। এ সময় অন্তত সাতজন আহত হয়। রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এরপর রাত ১০টায় ইলিয়াসের লোকজন আবার হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা কামাল উদ্দিনকে আহত করে। এ খবর পেয়ে রাত ১২টায় কামালের ছোট ভাই রাশেদ মিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাঁর ওপরও হামলা চালানো হয়। পরে গুরুতর আহত রাশেদকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রাউজানের জে কে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে রাত দেড়টায় রাশেদ মারা যান।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম মুর্শেদ বলেন, বিএনপির সমর্থকদের চোরাগুপ্তা হামলায় রাশেদ মিয়া নিহত হন। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা স্বেচ্ছায় বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানের জন্য পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁর নির্দেশমতো শপথও নিই। কিন্তু এর বিরোধিতা করে তৌহিদুলের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে।’ তিনি দাবি করেন, রাশেদ মিয়াকে কারা মেরেছে তা তিনি জানেন না।
তৌহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘ইলিয়াস ও তাঁর সহযোগীরা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ক্যাডার ছিল। কামরুল হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সে। জোট সরকারের আমলে সে আমাকে কয়েকবার প্রাণে মারার চেষ্টা করে। মামলা দিয়েও হয়রানি করে। এখন তাকে নিজের স্বার্থে ব্যবহারের জন্য স্থানীয় দুজন আওয়ামী লীগ নেতা ইন্ধন দিয়ে ইলিয়াসকে দলে যোগ দেওয়ানোর চেষ্টা করছে।’ তিনি দাবি করেন, যোগদানের বিরোধিতা করায় ইলিয়াস প্রথমে হামলা চালায়। রাত নয়টায় দ্বিতীয় দফা সংর্ঘষের পর পুলিশের সামনে ইলিয়াসের লোকজন গুলিবর্ষণ করে। এরপর তারা রাশেদকে হত্যা করে।

No comments

Powered by Blogger.