শেখ হাসিনাকে নির্বাচনে রাজি করাতে ইয়াজউদ্দিনের ‘প্রস্তাব’

ড়াই লাখ মার্কিন তারবার্তা ফাঁস করেছে উইকিলিকস। মার্কিন কূটনীতিকদের ভাষ্যে এসব তারবার্তায় বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশের রাজনীতি ও ক্ষমতার অন্দরমহলের খবর। শেখ হাসিনা নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে সম্মত হলে ২০০১ সালের ভোটার তালিকা এবং ২০০৬ সালের সম্পূরক তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছিল ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের উপদেষ্টা মোখলেছুর রহমান চৌধুরী মার্কিন দূতাবাসকে এ কথা বলেছিলেন। তবে এ ধরনের কোনো প্রস্তাব পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা। উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন তারবার্তায় এ কথা বলা হয়েছে।

২০০৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে পাঠানো তারবার্তায় ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তা গীতা পাসি উল্লেখ করেন, উপদেষ্টা মোখলেছুর রহমান তাঁদের বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয় সংগঠনের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটিতে নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণে শেখ হাসিনার লিখিত অঙ্গীকার চাওয়া হয়। তাতে রাজি হলে এবং আর কোনো দাবি না তোলা হলে বিনিময়ে ২০০১ সালের ভোটার তালিকা এবং ২০০৬ সালের সম্পূরক ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়নের কথা বলা হয়। এতে ওই ভোটার তালিকা নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত হালনাগাদের সুবিধা রাখার কথা বলা হয়। কথিত প্রস্তাবে আরও বলা হয়, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় তিন দিন পেছানো হবে। বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনার স ম জাকারিয়াকে ছুটিতে পাঠানো হবে বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।
তবে ওই ধরনের কোনো সমঝোতা-প্রস্তাব পাওয়ার কথা দূতাবাসের কাছে অস্বীকার করেছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ এবং শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সচিব সাবের হোসেন চৌধুরী। তাঁরা বলেন, এ ধরনের গুঞ্জন তাঁরাও শুনেছেন। জাফরুল্লাহ বলেন, নির্বাচনের তফসিল বাতিল করা হলেই কেবল শেখ হাসিনা কোনো ধরনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি আছেন।
এর কয়েক দিন আগে ১৩ ডিসেম্বর পাঠানো মার্কিন দূতাবাসের আরেকটি তারবার্তায় বলা হয়, রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া এ বিউটেনিস সেদিনই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের সঙ্গে ২৫ মিনিট বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এ আজিজকে ছুটিতে পাঠাতে সক্ষম হয়েছেন এবং রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে অন্য আরও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত আছেন। তবে নির্বাচন কমিশনার স ম জাকারিয়ার ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, খালেদা জিয়ার সম্মতি ছাড়া তাঁর ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপে তিনি রাজি নন। তিনি রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করে বলেন, সেনাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। উল্লেখ্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ‘বেসামরিক কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে’ তখন সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল।

No comments

Powered by Blogger.