আবার বিতর্কে শোয়েব আকতার

অবসরের ঘোষণাটা দিয়ে দেওয়ার পরেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না শোয়েব আকতারের। অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি কিছুদিন আগেই বলেছিলেন, বিশ্বকাপে পাকিস্তানের পরবর্তী ম্যাচগুলোতে শোয়েব খেলবেন, যদি তাঁকে সত্যিকার অর্থেই প্রয়োজন পড়ে। অন্যথায় বাকি ম্যাচগুলোতে তাঁর খেলার কোনোই সম্ভাবনা নেই।
শোয়েব আকতার ফর্মে ছিলেন না, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ওভারে ২৮ রান দিয়েছেন—সবই ঠিক আছে। কিন্তু সত্যিই কি শোয়েব ফর্মের কারণে বাকি ম্যাচগুলোতে সুযোগ পাচ্ছেন না, নাকি নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই কিন্তু নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে ‘অন্য কোনো কারণে’র কথাই জানিয়েছে শোয়েবের না খেলার নেপথ্য কারণ হিসেবে।
পিটিআই জানিয়েছে, শোয়েব আকতার অবসরের ঘোষণা দিলেও এ মুহূর্তে অনেক খেলোয়াড়ই একেবারে সহ্য করতে পারছেন না। তাঁকে একাদশে নিলে টিম স্পিরিট ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এমন আশঙ্কায় বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁকে বসিয়ে রাখারই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এমনকি তাঁকে এ মুহূর্তে অধিনায়ক আফ্রিদিও একেবারেই সহ্য করতে পারছেন না, এমন সংবাদও দিয়েছে পিটিআই।
ম্যানেজার ইন্তিখাব আলম, কোচ ওয়াকার ইউনুস, সহকারী কোচ আকিব জাভেদ কারোরই ‘গুডবুকে’ তিনি যে নেই, এ কথাও স্পষ্ট হয়ে গেছে। শোয়েবের এ পরিণতির একমাত্র কারণ, তাঁর আচরণ—দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র পিটিআইকে এ তথ্যও দিয়েছে।
খবরে প্রকাশ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের সময় কামরান আকমল যখন তাঁর বলে রস টেইলরের ক্যাচ ফেলে দিলেন, শোয়েব আকতার তখন অকথ্য ভাষায় কামরানকে গালিগালাজ করেন। এমনকি তিনি নাকি তাঁকে ধাক্কাও দিয়েছেন। এ কারণে, টিম ম্যানেজমেন্টের তরফ থেকে তাঁর দুই হাজার ডলার জরিমানাও করা হয়।
একজন সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে বয়সে অনেক ছোট কামরানকে গালি দেওয়া ও তাঁর গায়ে হাত তোলার ঘটনায় ম্যানেজার ইন্তিখাব নাকি ক্ষুব্ধ হয়ে শোয়েবকে বলেছেন, ‘তোমার এ মুহূর্তেই ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়া উচিত।’ এ ঘটনার ফলেই শোয়েব প্রথমে দলের প্র্যাকটিস সেশনে ও পরবর্তী সময়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিজের অবসরের কথা ঘোষণা করেন। অবসর ঘোষণা করে, ই মুহূর্তে একেবারে বন্ধুহীন অবস্থাতেই তিনি দলের সঙ্গে রয়েছেন।
পাকিস্তান দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রের বরাত দিয়ে পিটিআই জানিয়েছে, শোয়েব যে মাপের খেলোয়াড়, তাঁর সম্মান রক্ষার্থেই এসব ঘটনা চাউর হোক, তা চায়নি পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট। সে কারণেই মর্যাদার সঙ্গে তাঁকে অবসর নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন তারা।
ম্যানেজার ইন্তিখাব আলম অবশ্য পিটিআইর এসব তথ্যের সত্যতা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শোয়েবের সঙ্গে কামরানের এমন কিছু হয়নি, যার কারণে আমি তাঁকে অবসরে যাওয়ার নির্দেশ দেব। সে নিজের বিচার-বুদ্ধি বলে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।

No comments

Powered by Blogger.