বেনজির হত্যা নিয়ে হামিদ গুলের বক্তব্য ভিত্তিহীন: যুক্তরাষ্ট্র



বেনজির ভুট্টো হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল বলে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইনটেলিজেন্সের (আইএসআই) সাবেক প্রধান হামিদ গুল সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন, তাকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘নীতিবিবর্জিত’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন। একই সঙ্গে হামিদ গুল যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণায় নেমেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাস থেকে হামিদ গুলের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করার পর যুক্তরাষ্ট্রের জনসংযোগবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পি জে ক্রাউলিও গত বুধবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের কাছে গুলের দাবি অস্বীকার করেন। খবর পিটিআই ও দি নেশন অনলাইনের।
সম্প্রতি হামিদ গুল পাকিস্তানের একটি টেলিভিশন টক শোতে বেনজির হত্যাকাণ্ডবিষয়ক জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ওই প্রতিবেদনে মূল সত্য আড়াল করা হয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল বলে তিনি অভিযোগ করেন। ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাস থেকে তাত্ক্ষণিকভাবে এর প্রতিবাদ করা হয়। দূতাবাস থেকে বলা হয়, কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই হামিদ গুল মার্কিন সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনার পরও টক শোর উপস্থাপক তাঁকে চ্যালেঞ্জ না করে পেশাদার সাংবাদিকতার পরিচয় দেননি।
বুধবার পি জে ক্রাউলি বলেন, হামিদ গুলের বক্তব্য পুরোপুরি ভিত্তিহীন। টেলিভিশনে তিনি নিয়মিত রাজনৈতিক ভাষ্য দেন। নিশ্চিতভাবেই তাঁর যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী উদ্দেশ্য রয়েছে।
গত সোমবার পেশোয়ারে জামায়াতে ইসলামীর শোভাযাত্রায় সন্ত্রাসী হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধন ছিল বলে জামায়াতের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ক্রাউলি তাও প্রত্যাখ্যান করেন।
ক্রাউলি বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র এক হয়ে লড়াই করছে। তাদের হাতে পাকিস্তানিদের সঙ্গে মার্কিন সেনারাও মারা যাচ্ছেন। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা অর্থহীন। তিনি এসব অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে খতিয়ে দেখার জন্য পাকিস্তানের গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
এর আগে ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাস থেকে পাকিস্তানের সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়। এতে সে দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, পাকিস্তানের গণমাধ্যমকর্মীদের সাংবাদিকতার জ্ঞান ও উপদেশ না দিয়ে মার্কিন দূতাবাস তাদের দেশের লোকজনকে নীতিকথা শোনালে সেটিই বরং শোভনীয় হবে।

No comments

Powered by Blogger.