আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে জান্তা

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি বলেছেন, দেশের সামরিক জান্তা সরকার নির্বাচনের পর তাঁকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলে তাঁর মুক্তির আইনি প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। সু চির দলের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন। খবর রয়টার্স অনলাইনের।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল মং উ ২১ জানুয়ারি দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, নির্বাচনের পর নভেম্বরে অং সান সু চিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
সু চির আইনজীবী এবং তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিয়ান উইন জানান, নির্বাচনের পর নভেম্বরে মুক্তি দেওয়ার কথা শুনে সু চি বলেছেন, গৃহবন্দিত্বের বিরুদ্ধে তাঁর আবেদনের শুনানি করছেন সর্বোচ্চ আদালত। এই মুহূর্তে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। সু চির সঙ্গে দেখা করে উইন আরও বলেন, ‘মন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্য আইনি প্রক্রিয়া এবং আদালতের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার শামিল বলে মনে করেন সু চি।’
বিগত ২১ বছরের মধ্যে ১৫ বছরই গৃহবন্দী অবস্থায় কাটিয়েছেন সু চি। গত বছরের আগস্টে গৃহবন্দিত্বের শর্ত ভঙ্গের এক ঠুনকো অভিযোগে তাঁকে আরও দেড় বছর গৃহবন্দী করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। সু চি এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। কিন্তু নিম্ন আদালত এ আপিল শুনানিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে সর্বোচ্চ আদালত শুনানিতে রাজি হন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে জান্তা সরকার নতুন করে গৃহবন্দিত্বের নির্দেশ দেয়। অনেকে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে সু চির আপিল শুনানি হলেও তাতে কোনো লাভ হবে না। প্রকৃতপক্ষে জান্তা সরকার চাইলেই কেবল সু চি মুক্তি পেতে পারে।
১৯৯০ সালে মিয়ানমারের সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল সু চির দল এনএলডি। কিন্তু সামরিক সরকার এনএলডির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। ১৯৬২ সাল থেকে মিয়ানমার শাসন করছে সামরিক সরকার।
আসন্ন নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো ঘোষণা করেনি মিয়ানমার সরকার। তবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার করেছে জান্তা।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফিলিপ ক্রাউলি সম্প্রতি অং সান সু চিকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য সে দেশের সামরিক সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ বছর সাজানো একটি নির্বাচনের পর সু চিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে—এমন ইঙ্গিত পাওয়ার পরপরই তিনি এ আহ্বান জানান।
এনএলডি নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেছে, সামরিক শাসনকে বৈধতা দেওয়ার ষড়যন্ত্র হিসেবে এ নির্বাচনের আয়োজন করেছে সামরিক সরকার।

No comments

Powered by Blogger.