২০৫০-এর মধ্যে ৩ শূন্য অর্জনে ড. ইউনূসের ফর্মুলা

বিশ্বের নজর এখন রাশিয়ায় অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের দিকে। একে সামনে রেখে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল জোরালো অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া, চায়না ও  সাউথ আফ্রিকা) দেশগুলোর প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংক এনডিবি (নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) বিশ্বব্যাংকের ক্লোন হওয়া উচিত নয়। ২০৫০ সালের মধ্যে এনডিবিকে তিনটি জিরোর লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। এক. শূন্য দারিদ্র্য, দুই. শূন্য বেকারত্ব, তিন. শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার উফ শহরে আজ ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বৈঠকটি বসবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ ব্রিকস নেতারা ইতিমধ্যেই রাশিয়ার উফ শহরে পৌঁছেছেন। এই সম্মেলনকে সামনে রেখেই গতকাল ভারতের দৈনিক দি হিন্দু ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এতে তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক কার্যক্রমের হূদয় হতে হবে মানবাধিকার ও সুশাসন।  
দি হিন্দুতে ‘একটি নতুন যুগের জন্য একটি নতুন ব্যাংক’ শিরোনামে প্রকাশিত এক নিবন্ধে গ্রামীণ ব্যাংক জনক ড. ইউনূস লিখেছেন, চলতি সপ্তাহে রাশিয়ায় অনুষ্ঠেয় ব্রিকস এর বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে একশ’ বিলিয়ন ডলারের মূলধন নিয়ে বিশ্বের নবীনতম বহুজাতিক ব্যাংক হিসেবে এনডিবি প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসছে। কিন্তু এই ব্যাংক যেন বিশ্ব ব্যাংকের মতো পুরনো ধ্যান-ধারণা ও মানসিকতা নিয়ে প্রকল্প তৈরি না করে। এই ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য এমার্জিং দেশগুলোর আর্থিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহূত হতে দেয়া উচিত নয়। এর প্রতিষ্ঠার কারণ হওয়া উচিত খুবই উল্লেখযোগ্য। বিশ্বব্যাংক দেশে দেশে যেভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করা খুবই সহজ কিন্তু তাকে এই প্রবণতা প্রথম দিন থেকেই পরিহার করতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, আমি তাই এই নতুন ব্যাংকের উল্লিখিত তিনটি কোর বা মূল লক্ষ্য নির্দিষ্ট করার প্রস্তাব করছি। এজন্য তরুণ প্রজন্মকে উদ্বেলিত করে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক ব্যবসায়ের মাধ্যমে কর্মসংস্থানহীনতাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। প্রত্যেক মানব সন্তানের ডিএনএ-তে উদ্যোক্তা-সত্তা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.