অপমান করে বের করে দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার আত্মহত্যা?

ষাটোর্ধ্ব একজন মুক্তিযোদ্ধাকে অচেতন অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে রাজধানীর তোপখানা রোডের আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষ থেকে। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
পুলিশ বলছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তিনি একটি সুইসাইড নোট (চিরকুট) রেখে গেছেন। এতে মন্ত্রণালয়ের একজন সচিবকে অভিযুক্ত করে লেখা রয়েছে, ‘গলাধাক্কা দিয়ে অপমান করে বের করে দেওয়ায় আমি আত্মহত্যা করলাম’।
শাহবাগ থানার পুলিশ জানায়, এই মুক্তিযোদ্ধার নাম আইয়ুব খান (৬২)। তিনি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ইউনিটের সাবেক কমান্ডার। তিনি রাজধানীর তোপখানা রোডের হোটেল কর্ণফুলীর ২০৪ নম্বর কক্ষে উঠেছিলেন ১৫ দিন আগে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ ভেতর থেকে কীটনাশকের গন্ধ বের হলে হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। তারা গিয়ে দেখে, ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাঁকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। এরপর বেলা ১১টায় হাসপাতালে নেওয়া হলে ৩০ মিনিট পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মুঠোফোনের সূত্র ধরে পুলিশ নবাবপুরে তাঁর মামাতো ভাই আমীর হোসেনকে এ মৃত্যুর খবর জানায়। সন্ধ্যায় স্বজনেরা হাসপাতালে এলে তাঁর পরিচয় জানাজানি হয়। রাতে আইয়ুব খানের ছেলে আরিফ হোসেন ঢাকায় এসে পৌঁছান।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুন ফরাজী বলেন, পুলিশ হোটেলের কক্ষ তল্লাশি করে কাগজপত্র দেখে আইয়ুব খানের পরিচয় নিশ্চিত করে। অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে যে চিরকুটটি পাওয়া গেছে, সেটি তাঁর নিজের হাতের লেখা বলেই মনে হচ্ছে। অভিযোগটি গুরুতর হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
চিরকুটে লেখা রয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট ঘোষণার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নানকে টাকা দিয়েছিলাম। টাকা দিয়ে বারবার আবেদন করার পরও তিনি দক্ষিণ জেলা ইউনিট ঘোষণা করেননি। তাঁর বাসায় গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে তিনি গলাধাক্কা দিয়ে অপমান করে বের করে দেওয়ায় আমি আত্মহত্যা করলাম। আমার লাশটা যেন ঢাকায় দাফন করা হয়।
আইয়ুব খানের মামাতো ভাই আমীর হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চট্টগ্রাম দক্ষিণ ইউনিট গঠন নিয়ে তিনি দৌড়ঝাঁপ করছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে পরিবারের কাছে নানা অভিমানের কথাও বলেছিলেন।
আইয়ুব খানের ছেলে আরিফ হোসেনও একই কথা বলেন।
আরিফ হোসেন জানান, তাঁর বাবার লাশ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মরখোলায় দাফন করা হবে। তাঁরা দুই ভাই ও দুই বোন।
পুলিশের রমনা অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার এস এম শিবলী নোমান প্রথম আলোকে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, আইয়ুব খান কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হলেও চিঠির সূত্র ধরে ঘটনার তদন্ত করা হবে। তবে পরিবার এ মৃত্যুর বিষয় অভিযোগ দিলে তা গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করবেন তাঁরা।
রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, কমান্ড কাউন্সিল গঠনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো এখতিয়ার নেই।
এই মুক্তিযোদ্ধার বিষয়ে জানতে গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাতকানিয়া উপজেলা ইউনিট এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে তাঁর মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান নেতাদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। একি ভাবে...
আজাদ-কুমিল্লা উত্তর, ১৭ মার্চ ২০১৪ (বাংলা-নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম): মুরাদনগর উপজেলার খুরুইল গ্রামে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল  জমি থেকে জোর পূর্বক মাটি কেটে মসজিদ  মাদ্রাসার মাঠ ভরাট করে ও মসজিদে নামাজ পড়তে বাধাদেওয়া সহ হুমকি-ধমকি দেওয়ার অপমানের জ্বালা সইতে না পেরে মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবুল হোসেন(৭০) আত্মহত্যা করে। এ বিষয়ে তার ছেলে বেলাল হোসেন বাদী হয়ে গতকাল ১৬ মার্চ সোমবার মুরাদনগর থানায় মামলা করে। মুরাদনগর থানার এস আই আনোয়ার লাশ উদ্ধার করে গতকাল ১৬ মার্চ সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য  কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে।
স্থানীয় সুত্র ও পুলিশ জানায় উপজেলার খুরুইল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবুল হোসেনের বাড়ির পাশে জমি হতে ওই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম, মোকবল ড্রাইভারের ছেলে মহসিন, আ: রশিদের ছেলে মনির, জুনাব আলীর ছেলে নোমান, রব মাষ্টারের ছেলে আ: রহিমের নেতৃতে ¡ প্রভাবশালীরা জোর পূর্বক গত শুক্র ও শনিবার মাটি কেটে নিয়ে পার্শ্ববর্তী এক মসজিদ ও মাদ্রাসার মাঠ ভরাট করে। এতে ওই মুক্তিযোদ্ধা বাধা প্রদান করলে তাকে প্রকাশ্যে হুমকি ধমকি প্রদান করে। মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবুল হোসেন নিজে উল্লেখিতদের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় গত ১৫ মার্চ শনিবার অভিযোগ দায়ের করলে ওই দিনই মুরাদনগর থানার এস আই জহির ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ যাওয়ার কারনে ওই প্রভাবশালী মহলটি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবুল হোসেন আসর নামাজ পড়তে মসজিদে গেলে উল্লেখিতরা তাকে অপমান করে মসজিদ থেকে বের  করে দিয়ে প্রকাশ্যে গালমন্দ ও হুমকি প্রদান করে। এ অপমানের জ্বালা সইতে না পেরে পরদিন রোববার সকালে বিষপান করলে তাকে দাউদকান্দির রায়পুর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে বিকেলে সে মারা যায়।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

No comments

Powered by Blogger.