এনবিপি বাংলাদেশে লোকসান দিয়েছে ১৮৫০ কোটি রুপি তদন্তে ধীরগতি

বাংলাদেশে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (এনবিপি) লোকসান দিয়েছে ১৮৫০ কোটি রুপি। এ অর্থ লোকসান হয়েছে না কি দুর্নীতি হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত চলছে। এ জন্য দায়ী কে? তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থাই বা নেয়া হচ্ছে? এমন প্রশ্ন এখন পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের মধ্যে। এ লোকসানের  পেছনে কারণ কি তা অনুসন্ধান করছে কেপিএমজি। তারা যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে দায়ীদের মধ্যে অন্যতম হলো সৈয়দ আলী রেজা। তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। গতকাল এ খবর দিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এতে বলা হয়, এ ব্যাংকের শীর্ষ পদে আসীন ছিলেন সৈয়দ আলী রেজা। কিন্তু স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের (এসবিপি) সুপারভিশন অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের লেখা চিঠিতেও এ বিষয়টি উল্লেখ করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের ব্যবস্থাপনা বিভাগ। স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান গত ২৮শে মে একটি চিঠিতে লিখেছে- ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের অগ্রগতি রিপোর্টে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলী রেজার নাম উল্লেখ নেই। এসবিপি তার চিঠিতে আরও বলে যে, ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের ২৪১তম সভায় ৪৪ কর্মচারীকে শনাক্ত করা হয়, যাদের বিরুদ্ধে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য চার্জশিট দেয়া হবে। এনবিপির সূত্র বলেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইকবাল আশরাফের বন্ধুত্বের কারণে আলী রেজাকে চার্জশিটভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যাংকের বাংলাদেশ শাখার ঘটনা তদন্ত করছেন এনবিপির এক কর্মকর্তা। রেজাকে যেন দায়মুক্তি দেয়া হয় এমন চাপের মুখে রয়েছেন তিনি। ব্যাংকের সুপারভিশন ডিপার্টমেন্ট এনবিপিকে বলা হয়েছে, তারা যেন ৫ দিনের মধ্যে আলী রেজার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। তবে দৃশ্যত এনবিপি তা থোড়াই কেয়ার করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আবিদ কামার বলেছেন, এনবিপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে এসবিপি। তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, উপযুক্ত সময়ে এসবিপি সামনে এগিয়ে আসবে এবং সব তথ্য ফাঁস করবে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন ব্যাংকটির বাংলাদেশ শাখার আর্থিক ক্ষতি নিয়ে রিপোর্ট করে। এর ফরেনসিক অডিট করার জন্য এনবিপি ভাড়া করে কেপিএমজি’কে। এই সংস্থার অডিট রিপোর্টে বলা হয়, ব্যাংকটির বাংলাদেশ শাখা পরিচালনা খাতে ১৮৫০ কোটি রুপি লোকসানের নেপথ্যে দায়ী ৬১ জন। তার মধ্যে অন্যতম সাবেক প্রধান সৈয়দ আলী রেজা। এ জন্য এনবিপি চার্জশিট দিয়েছে ৫৭ জনের বিরুদ্ধে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় পরিষদের অর্থনীতিবিষয়ক স্থায়ী কমিটি এ বিষয়টি জাতীয় জবাবদিহিতাবিষয়ক ব্যুরোর কাছে তুলে ধরে, যাতে অপরাধীদের ধরে অর্থ ফেরত আনা যায়। তবে এখন পর্যন্ত এব্যাপারে কোন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয় নি। বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ হারানোর পর গত বছরের ডিসেম্বরে মন্ত্রিপরিষদের অর্থনৈতিক সহযোগিতাবিষয়ক কমিটি এ বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য ৬ কোটি ৫০ লাখ রুপি অনুমোদন করে। এ বিষয়ে এনবিপি’র কাছে জানতে চেষ্টা করে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। কিন্তু তারা সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। আলী রেজার বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না- এ প্রশ্নে কোন উত্তর দিতে সোমবার অস্বীকৃতি জানায় এনবিপি।

No comments

Powered by Blogger.