‘ধর্ম মন্ত্রণালয় অধর্মের কাজ করছে’ -সংসদে অনির্ধারিত আলোচনা

বাংলাদেশ থেকে এজেন্সির মাধ্যমে হজযাত্রী পাঠানো নিয়ে জাতীয় সংসদে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন চট্টগ্রামের দুই সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল ও নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেন, ‘নামে ধর্ম মন্ত্রণালয় হলেও সবচেয়ে বেশি অধর্মের কাজ করছে তারা। মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে রাখতে হবে কি না, বুঝছি না।’
মঈন উদ্দীন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে এবার রেজিস্ট্রেশনের আগেই মোয়াল্লেম ফি জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ফি জমা দেওয়ার আগেই মন্ত্রণালয়ের পছন্দের এজেন্সিদের পাসওয়ার্ড দিয়ে দেওয়া হয়। অনেকেই সন্দেহ করেন, এদের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নাম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, হুমায়রা হজ ট্রাভেল এজেন্সি থেকে ‘জে এফ দাস’ নামে একজন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। আরেকজন হাজির নাম ‘মোবাইল’। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এসব অধর্ম কাজের জন্যই বাংলাদেশিদের ওমরাহ হজের সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি আরব। এ ব্যাপারে তিনি সরকারের ‘যুক্তিনিষ্ঠ’ ও ‘বস্তুনিষ্ঠ’ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
মঈন উদ্দীন খান বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ১৯ জানুয়ারি ঘোষণা করা হয়েছে, ২১ জানুয়ারি থেকে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। যারা আগে রেজিস্ট্রেশন করবে, তারাই যেতে পারবে। বেসরকারিভাবে কোটা পূরণ হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা বন্ধ হয়ে যাবে। আসলে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে হাব সভাপতি থেকে ও মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তার ভাই ও ছেলের এজেন্সি থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে।
মঈন উদ্দীন খান বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাসান জাহাঙ্গীর আলমের ছেলেও সোবহানাল্লাহ হজ এজেন্সির মালিক। তাঁর ভাইয়ের নামে ইবনে বতুতা ট্রাভেল এজেন্সি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির আরেকজনের সঙ্গে যৌথভাবে এজেন্সি রয়েছে। আশকোনা হজ ক্যাম্পের প্রশাসনিক কর্মকর্তার এজেন্সি রয়েছে। তিনি বলেন, এ বছর ২৫ হাজার লোক হজ রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি। এঁরা হজে যেতে না পারলে একটা খারাপ প্রতিক্রিয়া হবে।
মঈন উদ্দীন খান নতুন হজযাত্রীদের সুযোগ করে দিতে দুটি প্রস্তাব দিয়ে বলেন, যাঁদের বয়স ৪০ বছরের নিচে, তাঁদের পরের বারের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা। আর যাঁরা প্রতিবছর হজ করেন, তাঁদেরও আগামীবারের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা। এর মাধ্যমে আমি কাউকে হজ করা থেকে বিরত থাকতে বলছি না। কেবল নতুনদের সুযোগ দিতে এই প্রস্তাব দিয়েছি। এতে করে কিছুসংখ্যক হজযাত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করার উপায় বের হবে। তাতেও সমাধান না হলে সব এজেন্সির হজযাত্রী যাতে হজে যেতে পারেন, সে ব্যাপারে একটা ব্যবস্থা করতে হবে।’
তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেনামে একাধিক হজ এজেন্সি রয়েছে। এ কারণেই অনিয়মের ঘটনা ঘটছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির এই সদস্য বলেন, এ ব্যাপারে সংসদীয় কমিটিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওমরাহর নামে মানব পাচারের অভিযোগে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা দিচ্ছে না সৌদি আরব।

No comments

Powered by Blogger.