‘কারাগার কারখানায় পুড়ল পৌনে তিন লাখ কম্বল’

রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কম্বল কারখানায় সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে পৌনে তিন লাখ কম্বল। এর মূল্য ২১ থেকে ২২ কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন কারখানার মালিক নেত্রকোনা-৫ আসনের সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল। কারাগারের সীমানার ভেতর আইজি প্রিজনের অফিসের কাছে ওই কারখানায় শুক্রবার বিকালে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচায়লক জিয়াদুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার পর কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু কম্বলের গুদাম হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়। জিয়াদুল ইসলাম জানান, ধোঁয়ায় কয়েকজন অসুস্থ হওয়া ছাড়া অগ্নিকাণ্ডে কেউ হতাহত হয়নি। অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে তিনি কিছু বলেনি। তবে কারখানার মালিক কারখানার মালিক ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল দাবি করেন, কারখানার ভেতরের বৈদ্যুতিক বাতি বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাত। আগুনে দুই লাখ ৮০ হাজার কম্বল পুড়ে তার ২১ থেকে ২২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কারখানার তত্ত্বাবধায়ক দেলোয়ার হোসেন জানান, বিকাল পৌনে চারটার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে কীভাবে আগুন লেগেছে তা বলা যাচ্ছে না। স্থানীয় লোকজন জানায়, বিকাল চারটার দিকে আগুন লাগে কম্বল কারখানার গোদামে। পরে তা কারখানার দিকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে কারখানাটি কারাগারের কয়েদিদের রাখা হয় যে অংশে তার প্রাচীরের বাইরে। কারাগারের তিন নম্বর গেটের ভেতরে কারখানাটি একটি টিনশেড  ভবনে স্থাপিত। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন জানান, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে সদর দফতর, লালবাগ ও পলাশী স্টেশনের ছয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত হয়। পরে আরও দুটি ইউনিট যোগ দেয়। কারখানার তত্ত্বাবধায়ক দেলোয়ার হোসেন জানান, ওই কারখানায় সাড়ে সাত হাজার লোক কাজ করছিল। ধোঁয়ায় দুজন অসুস্থ হয়েছে। তিনি আরো জানান, প্রায় দুই লাখ ২১ হাজার তৈরি কম্বল এবং কম্বল তৈরির সুতা আগুনে পুড়ে গেছে। এ ছাড়া কারখানার অনেক মেশিনও আগুনে নষ্ট হয়েছে। এতে আনুমানিক ২০ থেকে  ২১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জানান, শুক্রবার বিকেল চারটা ২০ মিনিটে কারাগারের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে ‘কাজল উলেন মিলস লিমিটেড’ নামের ব্যক্তি পরিচালিত ওই কারখানায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট পৌনে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। নিরাপত্তার স্বার্থে কারাগারের সীমানার বাইরে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।

No comments

Powered by Blogger.