কি নিয়ে বাঁচবে দেড় বছরের আবিদ

আবিদ হোসেন তানভীর। বয়স মাত্র দেড় বছর। অবোধ এ শিশুটি বুঝতে পারেনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ সে হারিয়েছে। গত ৫ই নভেম্বর সে হারিয়েছে তার মা আইরিন আক্তার আরজুকে। একই সঙ্গে হারিয়েছে তার খেলার সাথী সাত বছর বয়সী একমাত্র ভাই সাবিদ হোসেনকে। নিজ স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ হেফাজতে আছে তার পিতা ব্যাংক কর্মকর্তা আমান উল্লাহ আমান। করুণ, কঠিন, নির্মম এই ঝড় ছোট্ট এই শিশুর জীবনকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। পৃথিবীর ভাল-মন্দ বোঝার আগে, মানুষগুলো চেনার আগেই সবচেয়ে কাছের মানুষ তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে। মা, ভাইকে জীবন দিতে হয়েছে তারই জন্মদাতা পিতার হাতে। বয়সের কারণে এ দুঃসহ বেদনা হয়তো বোধগম্য হচ্ছে না শিশুটির। তাই সে অন্তত বেঁচে থাকতে পারছে বলেই মনে করছেন তার স্বজনরা।

স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত আমান উল্লাহ আমানকে গতকাল তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তাকে বিকাল ৩টায় আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মিরপুর মডেল থানার পুলিশ পরদির্শক (তদন্ত) মাইনুল ইসলাম। শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল পর্যন্ত সানজিদা ইয়াসমিন সুবর্ণার সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও স্ত্রী, সন্তানকে হত্যার বিষয়ে একেক সময় একেক তথ্য দিচ্ছে আমান। তবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সুবর্ণার কোন সম্পৃক্ততা পায়নি পুলিশ। ফলে গতকাল সুবর্ণাকে তার স্বজনদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে বলে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন। পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মো. নিশারুল আরিফ বলেন, তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আমানই তার স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করেছে। যদিও সে তা এখনও স্বীকার করেনি।
গত ৫ই নভেম্বর সন্ধ্যায় মিরপুরের মধ্য পাইকপাড়ার ভাড়া বাসায় আইরিন আক্তার আরজু (৩০) ও তার ৮ বছরের ছেলে সাবিদ হোসেনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। নিহত সাবিদ পাইকপাড়া আইকন কোচিং সেন্টারের কেজি ওয়ানের ছাত্র ছিল। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে আরজুর স্বামী পূবালী ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখার কর্মকর্তা আমানুল্লাহ আমানকে আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবারে আটক করা হয় আমানের প্রেমিকা সানজিদা ইয়াসমিন সুবর্ণাকে। এ বিষয়ে আরজুর চাচা ইউনুস হাওলাদার বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.