পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন by মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তিনি বলেছেন, পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। পুলিশের সাম্প্রতিক কিছু কার্যক্রম মারাত্মক রূপ নিয়েছে। তাদের আচরণ সংযত করতে হবে, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে (যুগান্তর, ০৭.১১.১৪)। পুলিশের গুলিতে আহত নাফিজ সালামকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
একটি দেশ কতটা সভ্য ও গণতান্ত্রিক, তা বিভিন্ন পরিমাপকে যাচাই করা যায়। এর মধ্যে একটি পরিমাপক হল পুলিশের পারফরম্যান্স। কোনো দেশের পুলিশ নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান ও সেবা প্রদানে কতটা আন্তরিক, তার ওপর ভিত্তি করে সে দেশের গণতান্ত্রিকতা ও সভ্যতা পরিমাপ করা যায়। এ পরিমাপক দ্বারা যদি কেউ বাংলাদেশের সভ্যতা ও গণতান্ত্রিকতা যাচাই করতে চান তাহলে হতাশই হতে হবে। কারণ, স্বাধীনতা-পরবর্তী ৪৩ বছরে বাংলাদেশের পুলিশ এখনও স্বাধীন ও পেশাদার হয়ে উঠতে পারেনি। নিজেদের প্রমাণ করতে পারেনি জনগণের সেবক ও বন্ধু হিসেবে। পরিবর্তে, সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমস্যা সৃষ্টিকারী এক অত্যাচারী বাহিনী হিসেবে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ যথার্থই পুলিশকে সর্বাধিক দুর্নীতিবাজ বিভাগ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। পাশ্চাত্যের অনেক দেশে স্কুলছাত্রদের কাছে স্বপ্নের পুরুষ হিসেবে গণ্য হন দমকল বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এ দুই বাহিনীর সদস্যরা জীবনবাজি রেখে বিপদাপন্ন মানুষকে সেবা দিয়ে স্কুলশিশুদের হৃদয়ে স্বপ্নের বীরপুরুষের জায়গাটি দখল করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের শিশু-কিশোরদের মধ্যে পুলিশ সম্পর্কে ধারণা একেবারেই বিপরীত। শুধু শিশু-কিশোর নয়, দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর পুলিশ সম্পর্কে ধারণা অত্যন্ত নেতিবাচক। সে কারণে সাধারণ মানুষ বিপদাপদে পুলিশকে এড়িয়ে চলতে চান। আবার অনেকে পুলিশকেই বিপদ মনে করেন। নাগরিকদের যেখানে সেবা নেয়ার জন্য পুলিশের কাছে যাওয়ার কথা, সেখানে তারা তাদের থেকে দূরে থাকেন; আর চোর-ডাকাত, ছিনতাইকারী-সন্ত্রাসীদের যেখানে পুলিশ থেকে দূরে থাকার কথা, সেখানে এসব অপরাধী ধরা পড়লে অনেক ক্ষেত্রেই দ্রুত পুলিশের নিয়ন্ত্রণে যেতে চান। এতেই পুলিশের চরিত্র উন্মোচিত হয়ে পড়ে।
পুলিশের পেশাদার হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারার পেছনে দুটি কারণ সবচেয়ে বেশি দায়ী। এর একটি হল পুলিশকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা এবং অন্যটি পুলিশ আইনের সংস্কার না করে প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো আইন দিয়ে বিভাগটি পরিচালনা করা। আরও অনেক কারণ থাকলেও এ দুটি প্রধান কারণেই পুলিশ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। মান্ধাতার আমলের আইন দিয়ে পুলিশ পরিচালনা করায় এ বাহিনীর পক্ষে স্বাধীনভাবে কাজ করা সম্ভব হয় না। এর ফলে দেখা যায়, পুলিশ দুর্নীতি দমনে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে নিজেই দুর্নীতিতে জড়িত হয়ে পড়ে। আর দুর্নীতিবাজ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তার তদন্তের ভার পড়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুলিশের ওপর। ফলে পুলিশের অপরাধের সুবিচার কতটা হয় তা নিয়ে প্রশ্ন করা যায়। সময়ের সঙ্গে অপরাধের ধরন ও মাত্রায় যে পরিবর্তন আসে, তার মোকাবেলায় পুলিশ আইনের পরিবর্তন ও সংস্কার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। প্রয়োজন হয়ে পড়ে নতুন অপরাধ মোকাবেলায় নতুন কলাকৌশল, উন্নত অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের। পুলিশ অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ পেলেও তাদের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্তি ও যুগোপযোগী আইন তৈরি করার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
শত শত বছর আগের পুলিশ আইন দিয়ে যে বর্তমানের অপরাধ দমন সম্ভব নয়, সে বোধ সরকারের থাকলেও কোনো নির্বাচিত সরকারই পুলিশ আইন সংস্কার করতে পারেনি। তবে ২০০৭-এর জানুয়ারিতে অসাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দীন সরকার পুলিশ আইন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল। ওই সরকার আমলে গঠিত পুলিশ অ্যাক্ট ড্রাফটিং কমিটি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর পুলিশ আইন পর্যালোচনা করে বাংলাদেশের জন্য খসড়া পুলিশ অধ্যাদেশ-২০০৭ প্রণয়ন করলেও তা কার্যকর করতে পারেনি। এ খসড়া অধ্যাদেশটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ অধ্যাদেশে পুলিশকে নিপীড়নকারী ভূমিকা থেকে বের করে একে দায়িত্বশীল, সেবাদানকারী, জনবান্ধব ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। অধ্যাদেশটির চতুর্থ অধ্যায়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চেয়ারপারসন করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় পুলিশ কমিশন এবং অষ্টম অধ্যায়ে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে চেয়ারপারসন করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমপ্লেইন্টস কমিশন গঠনের সুপারিশ ছিল। কেবল জাতীয় পুলিশ কমিশনের চেয়ারপারসন পদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাখার বিষয়টি গণবিরোধী হিসেবে সমালোচিত হলেও সব মিলিয়ে এ অধ্যাদেশটি পুলিশকে গণমুখী করার জন্য খুব একটা মন্দ ছিল না। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ফখরুদ্দীন সরকার শতাধিক অধ্যাদেশ পাস করলেও আলোচ্য অধ্যাদেশটি পাস না করেই কার্যকাল শেষ করে। পরে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে এ অধ্যাদেশ নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেও পুলিশ আইন সংস্কার করতে পারেনি। ওই সরকার হয়তো রাজনৈতিক কারণে চায়নি পুলিশ একটি স্বাধীন পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠুক।
মহাজোট সরকার এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পুলিশ আইন সংস্কার না করতে পারলেও পুলিশকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অগ্রগতি করেছে। এ দুই সরকার আমলে সরকারবিরোধিতা মোকাবেলায় পুলিশের ব্যবহার বেড়েছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। বিএনপি সরকার আমলের চেয়ে মহাজোট সরকার আমলে এবং মহাজোট সরকার আমলের চেয়ে বর্তমান সরকার আমলে পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহার বেড়েছে। বর্তমান আমলে পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহার যে বাড়বে তা আগেই অনুমান করা হয়েছিল। কারণ, এ সরকার যেহেতু প্রায় ভোটারবিহীন প্রশ্নবিদ্ধ একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে এবং ওই নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল অংশগ্রহণ করেনি, কাজেই এ সরকার তার পূর্ব-প্রতিশ্র“ত আরেকটি অংশগ্রহণমূলক সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ না নিলে যে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে সেটাই স্বাভাবিক। সরকার এ প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের ওপর ভর করে পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে চাইছে এবং এ ক্ষেত্রে বিরোধীদলীয় আন্দোলন দমাতে দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি ব্যবহার করছে পুলিশ বাহিনীকে। সরকারের সবুজ সংকেতে অহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও পুলিশ চড়াও হয়ে সেসব বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচি পণ্ড করে দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে কালো পতাকা মিছিল বা মানববন্ধনের মতো নিরাপদ কর্মসূচিতেও পুলিশ বাধা দিয়ে ওইসব রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দিচ্ছে না। নতুন সরকার আমলে আইন-শৃংখলা রক্ষায় পুলিশ ব্যর্থ হলেও রাজনৈতিক বিরোধিতা দমনে উল্লেখযোগ্য দাপট ও কৃতিত্ব দেখিয়েছে। সরকারবিরোধী আন্দোলন দমনে কঠোর ভূমিকা পালন করে পুলিশ সরকারের কাছে জনপ্রিয় হলেও সাধারণ মানুষের কাছে এ বাহিনীর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
বর্তমান সরকার আমলে পুলিশের ভাবমূর্তি আগের চেয়ে আরও হ্রাস পেয়েছে- এর অর্থ এই নয় যে, পূর্ববর্তী মহাজোট আমলে পুলিশের ভাবমূর্তি ভালো ছিল। কারণ, মহাজোট আমলে পুলিশকে মানুষ পবিত্র মাজার শরিফের টাকা লুট করে ধরা পড়তেও দেখেছে। দেখেছে ঢাকা সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থী তরুণীর শ্লীলতাহরণ করতে, সাংবাদিকদের পিটিয়ে নির্যাতন করতে, ফটো সাংবাদিকদের লাঠিপেটা করতে, সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ, হরতাল-মিছিলে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে রাজপথ থেকে বিতাড়িত করতে এবং আন্দোলনকারী নিরীহ বেসরকারি স্কুল শিক্ষকদের পিটিয়ে তাদের ওপর গরম পানি ঢেলে দিতে। আরও দেখেছে রাজনৈতিক নেতার বাসভবনে ঢুকে তার পারিবারিক সদস্যদের লাঠিপেটা করতে, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপকে পিটিয়ে অর্ধ উলঙ্গ ও আহত করা পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তির পরিবর্তে পদোন্নতি দিতে, বিরোধীদলীয় ছাত্রনেতাকে ফ্যানে ঝুলিয়ে চোখ বেঁধে নির্যাতন করতে, বিএনপি আমলের দুর্নীতিবাজ চাকরিচ্যুত কতিপয় পুলিশ সদস্যকে নব্য আওয়ামী লীগার সেজে সরকারদলীয় নেতা-এমপির তদবিরে চাকরিতে পুনর্বহাল হতে, একটি বিশেষ জেলার পুলিশ সদস্যদের বিশেষ সুবিধা ভোগ করতে, পুলিশের আট সদস্যের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটকে পুলিশের পদায়ন, পদোন্নতি ও বদলি নিয়ন্ত্রণ করতে (যুগান্তর, ৩১.০১.২০১০), পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ না করে পুলিশ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক লবিংয়ে ঝুঁকে পড়তে, র‌্যাবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রসফায়ার করতে এবং চাঁদাবাজি বন্ধ করার পরিবর্তে নিজেদেরই চাঁদাবাজি করতে। অর্থাৎ মহাজোট আমলে পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে
সাধারণ মানুষের কেমন ধারণা হয়েছে তা অনুমেয়। এ আমলের এক পর্যায়ে পুলিশের অমানবিক আচরণ ও নির্যাতন এতই বৃদ্ধি পায় যে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশ সদস্যদের
জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করে। তবে একদিকে রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশকে ব্যবহার করে অন্যদিকে তাদের কাউন্সেলিং করে মানবিক করার প্রচেষ্টা পরস্পরবিরোধী হওয়ায় সফল হয়নি।
বর্তমান সরকার আমলে পুলিশের ঘুষ-দুর্নীতি ও অপকর্ম আরও বেড়েছে। এ সময় সিদ্ধিরগঞ্জে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সদস্য তরিকুল ইসলামের বাসা থেকে চাইনিজ রাইফেলের গুলি ও বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়েছে, তুরাগ থানার তিন পুলিশ কর্মকর্তা উদ্ধারকৃত ফেনসিডিলের অধিকাংশ থানায় জমা না দিয়ে বিক্রি করে অর্থ বাটোয়ারাকেন্দ্রিক বিবাদে লিপ্ত হয়েছে, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন পুলিশ কমকর্তারা ব্যবসায়ীর টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, সাভার ও মিরপুরে পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন টাকা না দেয়ায় নির্যাতনে ব্যবসায়ীর মৃত্যু পুলিশের পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, রাজারবাগ পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কর্মরত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সাউন্ড গ্রেনেড বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে, কক্সবাজারের পেকুয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গৃহবধূ ধর্ষণের মামলা হয়েছে, রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের বাবর আলী মেম্বারের কাছ থেকে মহানগর থানার রাজপাড়া থানার ওসি খান মোহাম্মদ এরফানের আম ও টাকা ঘুষ দাবির অডিও সিডি পাওয়া গেছে, রাজধানীর ভাটারা থানার মাদক ব্যবসায়ীরা থানার ওসিকেই মাসে বিশাল অংকের টাকা দিচ্ছে। চট্টগ্রামে পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে দিনে আটক রাতে চুক্তি, টাকা দিলে মেলে মুক্তি শিরোনামে পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এভাবে একের পর এক পুলিশের ঘুষ-দুর্নীতির বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না।
বাংলাদেশ পুলিশের মানবাধিকার লংঘন এবং বিরোধী দলের প্রতি নির্যাতনের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ পুলিশের ব্যবহারের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইইউভুক্ত কতিপয় দেশও এ রকম অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ সদর দফতরকে বিপাকে ফেলে দেয়ায় সরকারকে পুলিশের গোলাবারুদ কেনার বিকল্প বাজার খুঁজতে হচ্ছে। ইইউভুক্ত দেশগুলো পুলিশে গোলাবারুদ রফতানির জন্য এক্সপোর্ট লাইসেন্স না দিয়ে তাদের আন্তর্জাতিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে বলেছে, বাংলাদেশে রফতানি করা অস্ত্র ও গোলাবারুদ মানবতাবিরোধী কাজে ব্যবহার করা হবে। হরতালসহ বিভিন্ন আন্দোলন এবং বিশৃংখলা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ১২ বোর শটগানের যে কার্টিজ আমদানির প্রক্রিয়া চলছিল, একই মনোভাবে ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে রফতানি প্রক্রিয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তির সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ পুলিশের ওপর বহির্বিশ্বের এ নেতিবাচক ধারণা দূর করে তাদের কাছে পুলিশকে একটি গ্রহণযোগ্য, শান্তি-শৃংখলা রক্ষাকারী পেশাদার বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে পুলিশকে রাজনৈতিক বিরোধিতা দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে পুলিশ আইনের সংস্কারের মধ্য দিয়ে এ বাহিনীকে একটি সেবামূলক, জনবান্ধব ও গণমুখী শান্তি-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার : অধ্যাপক, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.