মনের কোণে হীরে-মুক্তো-মেধাবী কিশোরদের বেশির ভাগই কর্মজীবনে সুউচ্চ খ্যাতিমান হয় না by ড. সা'দত হুসাইন

আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি, সে বছর আমার বড় ভাই ম্যাট্রিকুলেশন (বর্তমান এসএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। মফস্বল শহরে আমাদের বাসায় চার-পাঁচটি ছোট ঘর ছিল। পড়ার ঘরটিতে আমরা সব ভাইবোন একসঙ্গে পড়াশোনা করতাম।
কৌতূহলবশত আমি ভাইয়ের বই-খাতা-নোটগুলো পড়ে দেখতাম। তাঁর পরীক্ষা সম্পর্কে আমার কৌতূহলের শেষ ছিল না। পরীক্ষা দিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর প্রশ্নপত্র আমি নিয়ে নিতাম। কয়েক দিন পরে নম্বরসহ উত্তরপত্র ঘরে আনলে পাতা উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে তা দেখতাম। তাঁদের ক্লাসে কে ফার্স্ট-সেকেন্ড হয়েছে তা জেনে নিতাম এবং তাঁদের চেনার চেষ্টা করতাম। ছোট্ট শহর বলে তাঁদের চিনতে খুব একটা অসুবিধা হতো না। ভাইয়ের সতীর্থরা মোটামুটিভাবে আমাকে চিনতেন এবং সাধারণভাবে আমি তাঁদের স্নেহাস্পদ ছিলাম।
যেহেতু আমার ভাই পরীক্ষা দিয়েছেন, তাই পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো আমিও পরীক্ষার ফলাফল জানার জন্য বিশেষ উদগ্রীব ছিলাম। পরীক্ষায় সন্তোষজনকভাবে পাস করে ভাই কলেজে ভর্তি হন। আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ম্যাট্রিক পরীক্ষার ফলাফলের নানা দিক দেখতে থাকলাম। তখনকার দিনে ফলাফল দেখার মূল উৎস ছিল খবরের কাগজ। ফলাফলকে ঘিরে নানা রকম খবর প্রকাশিত হতো। যারা পাস করেছে তাদের রোল নম্বর প্রকাশিত হতো। যারা গড়ে ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেত তাদের রোল নম্বরের পাশে তারকা চিহ্ন বা স্টার থাকত। মোট নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম থেকে ৩০তম স্থান অধিকারী পরীক্ষার্থীদের নাম আলাদাভাবে ছাপা হতো। তাদের বলা হতো 'স্ট্যান্ড করা' ছাত্র। ফলাফলে নাম ও মেধাক্রম অনুযায়ী এদের অবস্থান দেখা যেত। এ তালিকায় যাদের নাম ছাপা হতো তারা রাতারাতি পাড়া-মহল্লায়, এমনকি পুরো শহরের মধ্যমণি হয়ে যেত। তাদের খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ত। রাস্তায় বেরোলে লোকে তাদের আঙুল দিয়ে দেখাত। অনেকেই তাদের সঙ্গে পরিচিত হতে, দুই বাক্য কথা বলতে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করত।
যারা প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় হয়েছে তাদের ব্যাপার তো আলাদা। তাদের দেখার সৌভাগ্য সহজে হওয়ার নয়। যেহেতু অন্য জেলার কোনো স্কুল থেকে তারা পরীক্ষা দিয়েছে এবং খুব সম্ভব ঢাকা, চট্টগ্রাম বা কোনো বড় শহরের কলেজে তারা ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়েছে, তাই আপাতত তাদের সঙ্গে দেখাশোনা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। জীবনে আদৌ দেখা-সাক্ষাৎ হবে কি না এরও কোনো নিশ্চয়তা নেই। এই উপলব্ধি থেকে তাদের সম্পর্কে জানার আগ্রহ আমার বেড়ে গিয়েছিল। খবরের কাগজ থেকে 'স্ট্যান্ড করা' ছাত্রদের তালিকা টুকে নিয়ে প্রথম দিকের কয়েকজনের নামধাম মুখস্থ করতে শুরু করি। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে একটি মাত্র শিক্ষা বোর্ড অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা বা সংক্ষেপে ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন ছিল। মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার। যে পরীক্ষার্থী প্রথম হয়েছে তার নাম বিশেষ যত্নসহকারে মনে রাখার চেষ্টা করি।
'স্ট্যান্ড করা' ছাত্র, বিশেষ করে প্রথম হওয়া ছাত্ররা ছিল আমাদের কাছে স্বপ্নের কিশোর। এরা দেখতে কেমন, এদের চলাফেরা কেমন, তারা কী খায়, দিনে কতক্ষণ এবং কখন তারা পড়াশোনা করে, তাদের কথাবার্তায় কী ধরনের অনন্য বৈশিষ্ট্য আছে, তা জানার জন্য আমি সদাসচেষ্ট ছিলাম। কিন্তু আমাদের মফস্বল শহর থেকে এসব তথ্য জানা সম্ভব ছিল না। ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার আগে কুমিল্লা ছাড়া অন্য কোনো জেলা শহর বা রাজধানী ঢাকা শহর দেখার আমার সুযোগ হয়নি। তাই প্রতিবছর প্রথম হওয়া ছাত্রের নামধাম মুখস্থ করলেও আমার পক্ষে তাদের দেখা পাওয়া সম্ভব হয়নি। এ আগ্রহ অবশ্য অন্যভাবে আমার কাজে লেগেছিল। 'স্ট্যান্ড করা' ছাত্ররা পরীক্ষায় মোট কত নম্বর পায় এবং কয় বিষয়ে তারা লেটার মার্ক (৮০ বা তদূর্ধ্ব) পায় সে সম্পর্কে আমার একটা স্বচ্ছ ধারণা জন্মেছিল। এসব তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ করে আমার প্রত্যয় সৃষ্টি হয়েছিল যে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে 'স্ট্যান্ড করা' ছাত্রদের সমান নম্বর পাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হতে পারে। ভালো ফল করার প্রচেষ্টা জোরদার করার জন্য এ প্রত্যয় বিশেষ সহায়ক হয়েছিল।
আমার সঙ্গে একই বছরে পাস করা সেরা মেধাবীদের দেখার, তাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার, এমনকি তাদের দু-একজনের বন্ধু হওয়ার সুযোগ এসে গেল আমাদের ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর। আল্লাহর অসীম রহমতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ছাড়াই আমি একাধিক বিষয়ে 'লেটার মার্ক' নিয়ে সম্মিলিত মেধা তালিকায় (তখন একটি তালিকাই প্রকাশিত হতো) স্থান পেয়ে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। তখন পর্যন্ত একমাত্র খোকন (ইঞ্জিনিয়ার ফজলুল আজিম এমপি) ছাড়া আমাদের শহরের ভালো রেজাল্ট করা ছাত্ররা সবাই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হতো। খোকন আমার দুই বছর আগে একই স্কুল থেকে ভালো ফল করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হলো যে আমাকেও ঢাকা কলেজে ভর্তি করানো হবে। সে মতে, বাবার হাত ধরে রাজধানীতে এসে ঢাকা কলেজে ভর্তি হলাম। ক্লাস শুরু হতে সপ্তাহ দুয়েক বাকি ছিল। বাবার সঙ্গে নিজ শহর নোয়াখালীতে ফিরে এসে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে সপ্তাহ দুয়েক পরে ঢাকা কলেজ সাউথ হোস্টেলের বরাদ্দকৃত কক্ষে উঠলাম। সেদিন থেকেই আমার ঢাকায় বসবাস শুরু।
আমাদের সঙ্গে প্রথম হওয়া ছাত্র মাহবুব হুসেন খান নটর ডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিল। তাই তার সঙ্গে দেখা হলো না। দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ স্থান অধিকারী সবাই ঢাকা কলেজে ভর্তি হলো। তাদের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় হলো। যারা সাউথ হোস্টেলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিল তাদের সঙ্গে পরিচয়টা অনেকটা নিবিড় পর্যায়ে পৌঁছে গেল। একটা বিষয় ভালো লাগল যে এরা আমাকে সমপর্যায়ের ছাত্র হিসেবে মনে করত, যদিও আমার ফল তাদের মতো সুউচ্চ পর্যায়ের ছিল না। এদের সঙ্গে চলাফেরা এবং আলাপ-আলোচনা করতে আমি খুবই আনন্দ পেতাম। এদের মধ্যে কয়েকজন যেমন সাইফুল হক, কাজী হাসান আমিন, জয়নাল, আজিজ খুবই অগ্রসর স্তরের ছাত্র ছিল। বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে ইংরেজি সাহিত্য, দর্শন এবং বিজ্ঞানে এদের পড়াশোনা আমার চেয়ে অনেক বেশি ছিল। বক্তৃতা এবং কথাবার্তায় এরা আমার তুলনায় অনেক বেশি চৌকস ছিল। এদের সাহচর্যে এসে নিজের দুর্বলতা আমি প্রকটভাবে উপলব্ধি করি। পরবর্তী সময়ে সে দুর্বলতা দূর করতে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট হই।
কয়েক মাসের মধ্যে প্রথম হওয়া ছাত্র মাহবুব হুসেনের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ এসে গেল। ঢাকা বোর্ড ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় বিভিন্ন বিষয়ে যারা সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে তাদের স্বীকৃতি জানানোর জন্য বোর্ড প্রাঙ্গণে এক বিরাট সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অঙ্ক ও ইতিহাসে সে বছর আমি সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলাম। ঢাকা কলেজের সতীর্থদের অনেকেই সম্মাননা গ্রহণের জন্য সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিল। আরো দু-একটি কলেজ থেকে পুরস্কার গ্রহণের জন্য কৃতী ছাত্ররা এসেছিল। নটর ডেম কলেজ থেকে মাহবুব হুসেন খান এসেছিল। সেই অনুষ্ঠানে মাহবুবকে আমি প্রথম দেখেছিলাম। আমার চেয়ে উচ্চতায় সামান্য কম, মায়াবী চেহারার প্রতিভাদীপ্ত এক টগবগে কিশোর। হালকা-পাতলা ছিমছাম গড়ন। চোখে চশমা কিন্তু প্রখর শাণিত চাহনি। সারা গায়ে মেধাবী ছাত্রের ছাপ জড়ানো। চাল-চলন, কথাবার্তায় সহজ-সাবলীল ভাব। আমার সঙ্গে মাহবুব এমনভাবে কথাবার্তা বলল, যেন আমি তার অনেক দিনের পরিচিত। মাহবুবের সঙ্গে এই পরিচয় ঘটনাপরম্পরার মধ্য দিয়ে পরবর্তীকালে বন্ধুত্বে উত্তীর্ণ হয়। সে বন্ধুত্ব আজও অটুট রয়েছে। অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে মাহবুবের জীবন এগিয়েছে। কর্মজীবনে বা একাডেমিক অঙ্গনে খ্যাতির শীর্ষে সে উঠতে পারেনি। সিভিল সার্ভিসে মাহবুব আমাদের সহকর্মী হয়েছিল। সে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। মানুষ হিসেবে ছোটখাটো ভুল করেছে। চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করেছে, ব্যবসা ছেড়ে দৈনিক পত্রিকায় যোগ দিয়েছে, এখনো পত্রিকায়ই কাজ করছে। ছোট গল্প লিখেছে, বই লিখেছে। বৈষয়িক দিক থেকে ততটা সার্থক না হলেও জ্ঞান-গরিমায় আজও সে ভাস্বর। পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র হলেও ইংরেজি সাহিত্যের ওপর তার চেয়ে বেশি দখল রয়েছে- এমন ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত বাংলাদেশে বিরল। মাহবুবের সঙ্গে সামনাসামনি আমাদের অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য হয়। মান-অভিমান হয়, কিন্তু মাহবুবের অনুপস্থিতিতে আমরা, তার সতীর্থরা শুধু তার শুভ কামনা করি। আসলে আমরা মাহবুবকে গভীরভাবে ভালোবাসি। সে যে আমাদের সঙ্গে পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিল এবং এখনো সে আমাদের সবার চেয়ে মেধাবী- এটা আমাদের মনে গেঁথে আছে। মতের মিল-অমিল, দোষ-গুণ সব কিছু নিয়ে মাহবুবের স্থান আমাদের আত্মার গভীরে।
মাহবুব হুসেনসহ প্রথম হওয়া যেসব ছাত্রের সম্পর্কে আমি জানতে পেরেছি, তাঁরা হলেন সর্বজনাব এখলাস আহমেদ ('৫৫), মুনিবুর রহমান ('৫৬), নৃপেন্দ্র চক্রবর্তী ('৫৭), শচীদুলাল ধর ('৫৮), তারেক আলী ('৫৯), আহমেদ শফি ('৬০), মাহবুব হুসেন খান ('৬১), মুঈন খান ('৬২)। ১৯৬২ সালের পর বোর্ড ভাগ হয়ে যায় এবং প্রতি বোর্ডে আবার বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্যভিত্তিক ফল প্রকাশ করা হয়। এ সময় বেশ কিছু প্রথম হওয়া ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে দেখতে পেয়েছি, তবে পরবর্তীকালে তাদের সবার সম্পর্কে খবর রাখা সম্ভব হয়নি। আজকের আলোচনা উল্লিখিত ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানা তথ্যের ভিত্তিতে রচিত। এঁদের মধ্যে দুজন ছাড়া আর সবাইকে আমি দেখেছি। কয়েকজনের সঙ্গে আমার আলাপ-পরিচয় রয়েছে।
তাঁরা সবাই হয় পদার্থবিদ্যা অথবা অঙ্কশাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন। স্নাতকোত্তর পর্ব পর্যন্ত সবাই ভালো ফল করেছেন; দু-একজন ছাড়া সবাই নিজ শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। একজন ছাড়া সবাই পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন এবং বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। তবে নিজের অধিত বিষয়ে কেউ বিশ্বমানের খ্যাতি অর্জন করতে পেরেছেন- এমনটি বলা যাবে না। গণিতবিদ বা পদার্থবিদ হিসেবে দেশের মধ্যেও তাঁরা খ্যাতিমান বা অবিসংবাদিতভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত হননি। আন্তর্জাতিক পরিধি বাদ দিলেও দেশীয় পর্যায়ে পদার্থে সত্যেন বোস, ইতিহাসে আর সি মজুমদার, বাংলায় মোহিতলাল মজুমদার কিংবা অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, ইংরেজিতে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সমাজবিজ্ঞানে অধ্যাপক নাজমুল করিম যেভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত বা সুখ্যাত হয়েছেন, প্রথম স্থান অধিকারীরা তেমন কিছু হতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। একাডেমিক অঙ্গনে তেমন খ্যাতি অর্জন হয়তো তাঁদের মূল আকাঙ্ক্ষা হিসেবে ছিল না। নিজ পরিবৃত্তে নিজের মতো করে জ্ঞানচর্চা এবং একটি সুন্দর আলোকিত জীবনযাপনের মধ্যেই তাঁরা সন্তুষ্ট থাকতে চেষ্টা করেছেন।
আসলে দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক একাডেমিক অঙ্গনে সুউচ্চ আসনে কেন তাঁরা অধিষ্ঠিত হননি বা হতে পারেননি এর সুনির্দিষ্ট কারণগুলো জানতে হলে আরো তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন, তাঁদের অন্তত কয়েকজনের সঙ্গে একান্ত আলোচনার প্রয়োজন। তাঁরা এখনো জীবিত আছেন, তবে কেউ কেউ বিদেশে বসবাস করছেন। প্রত্যেকের সঙ্গে একান্ত আলোচনা সম্ভব না হলে তাঁদের অন্তরঙ্গ বন্ধু-বান্ধব, আপনজনের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করলেও অনেক তথ্য জানা যাবে, যা একাডেমিক বিশ্বে প্রতিষ্ঠালাভের উপাদান ও কৌশল সন্ধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ লেখার মাধ্যমে মেধাবী ব্যক্তিদের একাডেমিক অঙ্গনে সুপ্রতিষ্ঠা লাভের কাঠামো, কলা-কৌশল এবং ক্রিয়া-পদ্ধতি জানার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে মাত্র। একাডেমিক কিংবা অন্য কোনো অঙ্গনে শুধু মেধার বলে সুউচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হওয়া যায় না। এর জন্য আরো কিছু গুণ, সহায়ক পরিবেশ এবং যথাসময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন হয়। এসব জেনে নিয়ে সঠিক পথে সঠিক পদ্ধতিতে অগ্রসর হলে স্বীকৃতি, খ্যাতি ও প্রভাববলয়ের সুউচ্চ শিখরে অধিষ্ঠান করা সক্ষম হবে। এ ব্যাপারে সমীক্ষাভিত্তিক গবেষণা চালানো দেশের মেধা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হবে।

লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান পিএসসি ও
মন্ত্রিপরিষদ সচিব

No comments

Powered by Blogger.