‘তার কাছে কোন মুখ নিয়ে যেতাম’

‘তিন দিন ধরে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমার স্ত্রীকে দেখতেও যাইনি। তার কাছে কোন মুখ নিয়েই বা যেতাম! জ্ঞান ফিরতেই সে পরাগকে দেখতে চাইছিল। এখন ছেলেকে ফিরে পেয়েছি, স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পরাগকে দেখাতে তাই স্ত্রীকে আনতে যাচ্ছি।’


অপহূত শিশু পরাগকে ফিরে পাওয়ার পরদিন গতকাল বুধবার বাবা বিমল মণ্ডল স্কয়ার হাসপাতালে দাঁড়িয়ে এভাবেই প্রথম আলোর কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
গতকাল বেলা ১১টার পর বিমল মণ্ডল স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে যান ছেলেকে দেখতে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ শরীর নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় তিন দিন ধরে বিলাপ করছিলেন পরাগের মা লিপি মণ্ডল। তিনি পরাগকে দেখতে চান। তাঁকে কোনো সান্ত্বনা দিয়ে কাজ হতো না। এখন ছেলে উদ্ধার হয়েছে, তাই বক্ষব্যাধি হাসপাতাল থেকে স্কয়ার হাসপাতালে আনা হবে মাকে।
বিমল বলেন, ‘ছেলেকে ফিরে পেয়েছি, এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। এ জন্য প্রশাসন ও গণমাধ্যমের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’
বিমল মণ্ডল আরও জানান, অপহরণকারীরা তাঁর স্ত্রীর বুকে গুলি করেছে। পুরো শরীরে ব্যথা, নড়াচড়া করতে পারছেন না। তার পরও ছেলেকে দেখতে এসেছেন। বিকেল পৌনে চারটার দিকে বিমল মণ্ডল তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে স্কয়ার হাসপাতালে যান। হুইল চেয়ারে বসিয়ে তাঁকে আটতলায় শিশু বিভাগের আইসিইউতে পরাগের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। স্বজনেরা জানান, ছেলেকে ফিরে পাওয়ার খবর গত মঙ্গলবার রাতেই মাকে জানানো হয়।
পরাগের বড় বোন পিনাকি মণ্ডল (অপহরণকারীদের গুলিতে আহত) পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে শুয়ে ছিল কেরানীগঞ্জের বাড়িতে। সে বলে, ‘আমরা ভাইকে ফিরে পেয়েছি, এই আনন্দে আমরা এখন আতশবাজি ফুটাব।’ দাদি সাবিত্রী মণ্ডল বলেন, ‘আমার নাতিকে আমি ফিরে পেয়েছি। এর চেয়ে বড় আনন্দের খবর কিছু হতে পারে না।’

No comments

Powered by Blogger.