পদ্মা সেতু নিয়ে দুদকের প্রেসনোট-বিশ্বব্যাংক সুনির্দিষ্ট কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছে

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে বিশ্বব্যাংক কিছু তথ্য কমিশনকে দিয়েছে। এতে সুনির্দিষ্টভাবে কয়েকজনের নাম উল্লেখ রয়েছে। তবে দুদক মনে করে, তদন্তের বর্তমান পর্যায়ে ওই ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা আইনত ঠিক নয়। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে পাঠানো এক ব্যাখ্যায়


আরও বলা হয়েছে, পরামর্শক সংস্থার কাছ থেকে ওই সব ব্যক্তি ঘুষ দাবি করেছেন—প্রাপ্ত তথ্যে তদন্তাধীন সময়ে এ ধরনের উপসংহারে আসাও ঠিক নয়। তদন্ত-প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে কমিশন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।
ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির একটি অভিযোগ বিশ্বব্যাংক তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কানাডীয় তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে। তদন্ত শেষে পরামর্শক সংস্থা এসএনসি-লাভালিনের দুই কর্মকর্তা রমেশ সাহা ও মোহাম্মদ ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করে কানাডীয় তদন্ত দল। তাঁদের ‘করাপশন অব ফরেন পাবলিক অফিশিয়াল অ্যাক্ট’-এ অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে দুদকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এদিকে, বিশ্বের অন্যতম এই প্রকৌশল সংস্থা এসএনসি-লাভালিনের সাবেক দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের শুনানি আগামী বছরের এপ্রিলে শুরু হবে। ওই দুই কর্মকর্তা পদ্মা সেতুতে পরামর্শকের কাজ পেতে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও কানাডার দ্য স্টার ডট কমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
দুদকের ব্যাখ্যা: ব্যাখ্যায় জানানো হয়েছে, কমিশনের পক্ষ থেকে কানাডীয় তদন্ত সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তারাও দুদককে সাহায্য করবে বলেছে। যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ শেষে অনুসন্ধানে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুদক আরও বলেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণ একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে অভিযোগ ওঠা অস্বাভাবিক নয়। আর প্রতিটি পর্যায়ে পরিপূর্ণ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। তাই কমিশন প্রতিটি অভিযোগই গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
দুই কর্মকর্তার শুনানি: এসএনসি-লাভালিনের সাবেক দুই কর্মকর্তা রমেশ শাহ (৬১) ও মোহাম্মদ ইসমাইলকে (৪৮) গত সোমবার টরন্টোর একটি আদালতে হাজির করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের শুনানির তারিখ ঠিক করতেই মূলত দুজনকে আদালতে নেওয়া হয়। পরে আদালত অভিযোগের প্রাথমিক শুনানির জন্য আগামী বছরের এপ্রিলের ৮ থেকে ১৯ তারিখ দিন ধার্য করেন। এ ব্যাপারে এসএনসি-লাভালিন বা দ্য রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
এসএনসি-লাভালিনের ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফরেন পাবলিক অফিশিয়াল অ্যাক্টের আওতায় অভিযোগ আনা হয়েছে। কানাডা কর্তৃপক্ষ গত বছর তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু করে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির বিষয়টি কানাডা সরকারের নজরে আনে। পরে অবশ্য বিশ্বব্যাংক ওই সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে।
আরসিএমপি ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসএনসি-লাভালিনের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রমেশ ও ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করে।

No comments

Powered by Blogger.