ডিসিসির ওয়েবপোর্টাল-তথ্যও কিন্তু সেবার অংশ

ঢাকা সিটি করপোরেশন নিয়ে নাগরিকদের অভিযোগের অন্ত নেই। বিপরীত পক্ষে এ কথাও সত্য, কোটি মানুষের শহরে সীমিত লোকবল, বাজেট আর অবকাঠামো নিয়ে অগণন নানা খাতের সেবার ভার বহন করতে হয় ঢাকা সিটি করপোরেশনকেই। মানুষের প্রত্যাশা অনেক, সিটি করপোরেশনের সাধ্য তেমন নেই।


ক্ষেত্রবিশেষে সেবার তেমন মানসিকতাও নেই। যদি থাকত তবে কিছু চেষ্টা কিছু তৎপরতার ছাপ অন্তত দেখা যেত। শহর আধুনিক হচ্ছে, মানুষ তথ্যপ্রযুক্তিতে অভ্যস্ত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সিটি করপোরেশন তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সেবা ব্যবস্থায় গতি আনতে পারছে না। কারণ, যে ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে সেবা দেওয়ার কথা তার অবস্থাই বেহাল। নগরের অতি সাধারণ তথ্য-পরিসংখ্যান দূরের কথা, অতিপ্রয়োজনীয় ডকুমেন্টও সেখানে পাওয়ার কোনো উপায় নেই। কেউ বাড়িভাড়া সংক্রান্ত বিধিবিধান খুঁজলে যেমন পাবেন না, তেমনি কোথায় কোথায় রাস্তার সংস্কার কাজ চলছে, কোন রাস্তা বন্ধ আছে তেমন তথ্যও মিলবে না। অথচ আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সাধারণ তথ্য সরবরাহ করাটা প্রাথমিক কাজ। এছাড়া প্রয়োজনীয় রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স প্রদান ইত্যাদি কাজও ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই করা হয়। আমাদের দেশে তথ্যপ্রযুক্তির এমন ব্যবহার সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তরফে সাধারণত ঘটে না। অনেকে মনে করেন, এর প্রধান কারণ পশ্চাৎপদতা এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে অজ্ঞতা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থও কোনো কোনো ক্ষেত্রে জড়িত। প্রতিদিন বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহসহ সেবা গ্রহণের জন্য করপোরেশনে লোকসমাগমের পথ বন্ধ করতে অনেকেই সহসা রাজি হবেন না। ফলে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটটি যথারীতি বেহাল অবস্থায় আছে। এ অবস্থা থেকে দ্রুত বের হয়ে আসা দরকার। বিশাল নগরের সমস্ত তথ্য পর্যায়ক্রমে সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটে সনি্নবেশিত হওয়া যেমন দরকার, তেমনি নিয়মিত আপডেটের মাধ্যমে সে তথ্যগুলোকে হালনাগাদ করাও দরকার। তথ্যসমৃদ্ধ ওয়েবসাইট নাগরিকদের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে নাগরিকদের সেবা দেওয়ার কথা ভাবতে হবে। নইলে যুগ তার মতো এগিয়ে যাবে, প্রযুক্তিও। কিন্তু আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের গুরুত্ব ও জনপ্রিয়তা হারাতে থাকবে ক্রমশ।
 

No comments

Powered by Blogger.