শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ-সামরিক আদালতে হাসিনুরের চার বছর তিন মাসের সাজা

সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার দায়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমানকে (৪৭) চার বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন সামরিক আদালত। ১৫ মার্চ তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কারা প্রশাসনের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, হাসিনুর রহমানকে কারা প্রশাসনের হাতে সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনী। নির্ধারিত সাজা তিনি বেসামরিক কারাগারেই খাটবেন।

হাসিনুরের স্ত্রী শামীমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, রায়ের ব্যাপারে তাঁরা কিছু জানেন না। সেনা কর্তৃপক্ষ তাঁদের কিছু জানায়নি। হঠাৎ করে হাসিনুর বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে ফোন করে জানান, তাঁর জেল হয়েছে। শামীমা আক্তার বলেন, তিনি মনে করেন তাঁর স্বামী নির্দোষ। ২৮ বছরের কর্মজীবনে শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কাজ তিনি করেননি।
সূত্র জানায়, লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমানকে গত জুলাই মাসে আটক করা হয়। ওই সময় তিনি ময়মনসিংহে অবস্থিত আর্মি রিসার্চ ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডে (আর্ট ডক) কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) ১০ম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের (লংকোর্স) মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। দীর্ঘদিন র‌্যাবের একটি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ছিলেন হাসিনুর।
হাসিনুর গ্রেপ্তার নিয়ে এর আগে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লে. কর্নেল হাসিনুর রহমানকে শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সেনা আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পরই ঘটনা তদন্তে গত ১১ জুলাই একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত আদালত গঠন করা হয়। তদন্ত আদালতের সুপারিশের ভিত্তিতে লে. কর্নেল হাসিনুরের বিরুদ্ধে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর একটি ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শাল গঠন করা হয়।
সেনা সূত্র জানায়, একজন ব্রিগেডিয়ারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি সামরিক আদালতে হাসিনুর রহমানের বিচার হয়। আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো হচ্ছে, হরকাতুল জিহাদ নেতা মাওলানা ইয়াহিয়ার সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রক্ষা করা, হিযবুত তাহ্রীরের তিন সদস্যের সঙ্গে দেখা করা, চট্টগ্রামে একজন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির ব্যাপারে টেলিফোনে বিদেশির সঙ্গে ফোনালাপ, পাহাড়ে শান্তি চুক্তিবিরোধী একটি গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ও সেনা অভিযানের খবর ফাঁস করে দেওয়া।

No comments

Powered by Blogger.