‘শক্ত’ রিপোর্ট দিচ্ছে কমিটি?

বাংলাদেশ লিগ কমিটির দিকে এখন গোটা ফুটবল অঙ্গনের চোখ। শেখ জামাল-রহমতগঞ্জ ম্যাচ পাতানো অভিযোগের তদন্ত শেষে কী রিপোর্ট দিচ্ছে কমিটি?
লিগ কমিটির এক সদস্য কাল সকালে বলছিলেন, ‘রিপোর্ট তৈরি করার জন্য ফেডারেশনের কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দু-তিন দিনের মধ্যেই আশা করি রিপোর্ট পৌঁছে যাবে ফেডারেশন সভাপতির কাছে।’
তখনো ওই কর্মকর্তা জানতেন না মারুফুল হক কী বোমা ফাটিয়েছেন! মুক্তিযোদ্ধা কোচ পরশু বলেছেন, ‘শেখ জামাল-রহমতগঞ্জ ম্যাচের বিরতির সময় আমার ফোনে ভুল করে ফোন করেন রহমতগঞ্জের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন কালা ভাই। তখন তিনি শেখ জামালের কর্মকর্তা ভেবে আমাকে বলেন, ‘ডিফেন্ডার উঠাইয়া লইছি, এবার আপনারা যত পারেন গোল দেন...।’
এ ব্যাপারে কাল সালাউদ্দিন কালার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিরক্তির সুরে তিনি বললেন, ‘ভাইজান, এই ব্যাপারটা নিয়া আমারে আর জ্বালাইয়েন না।’ পরে বললেন, ‘আমি তো মারুফকে ফোন করিনি। ফোন করেছি আমাগো সেক্রেটারিরে। মাইকেল দুম্বারে উঠাইয়া নেওয়ার কথা তারে বলছি। ও-ই সেদিন ম্যাচে আমাদের দুই গোলে লিডের সময় মারুফ আমাকে ফোন করে বলল, কালা ভাই, লিডটা ধইরা রাখেন। আমার পকেটে সাড়ে তিন লাখ টাকা আছে নিয়া যাইয়েন...।’
মারুফ বিষয়টা খোলাসা করেছেন, ‘ওদিন রহমতগঞ্জ দুই গোলে এগিয়ে আছে শুনে আমি কালা ভাইকে ফোন করে বলেছি, লিডটা ধরে রাখেন। তখন তিনি আগের একটা প্রসঙ্গ টেনে হাসতে হাসতে মিষ্টি খেতে চেয়েছেন। টাকা নিয়ে তো কোনো কথাই হয়নি। তিনি পরে ভুলে আমাকে ফোন করে পাতানোর ব্যাপারে কথাগুলো বলেন।’
অবস্থা যখন এই, আজই বিকেল সাড়ে পাঁচটায় লিগ কমিটির সামনে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছে মারুফ ও সালাউদ্দিন কালাকে। লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী কারণটাও জানালেন, ‘মারুফের দেওয়া তথ্য তদন্তকাজে সহায়তা করবে। বিষয়টা গুরুত্ব দিয়েই দেখছি আমরা।’
আগ্রহীদের আরও আগে ডাকল না কেন তদন্ত কমিটি? প্রশ্নটা সবার। মারুফই তা সামনে নিয়ে এসেছেন, ‘ফেডারেশন সবাইকে উন্মুক্ত আমন্ত্রণ জানিয়ে তথ্য চাইতে পারত। কিন্তু তারা চায়নি। চাওয়া উচিত ছিল।’
মারুফের দাবি নাকচ করে লিগ কমিটির এক সদস্য যুক্তি দেখিয়েছেন, ‘ম্যাচটা পাতানো হয়েছে কি হয়নি এটা নিয়ে দ্বিধা থাকলেই তো আমরা বাইরের সাহায্য নিতাম। কিন্তু আমরা যখন বুঝতে পেরেছি, এটি আসলেই পাতানো, তখন বাইরের কাউকে ডাকার দরকারই ছিল না।’
সালাম মুর্শেদী জানাচ্ছেন, ‘রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমরা কয়েক দিনের মধ্যেই ফেডারেশন সভাপতিকে একটা রিপোর্ট এবং সুপারিশ দেব। সিদ্ধান্ত নেবেন সভাপতি সাহেব।’ রিপোর্টে কী থাকছে, ‘অন রেকর্ড’ কিছু বলতে চাননি সালাম। শুধু এটুকুই বললেন, ‘আমরা একটা শক্ত রিপোর্টই দেব, এ ব্যাপারে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন।’
লিগ কমিটির আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, রিপোর্টে বলা হবে ম্যাচ দেখে কমিটির মনে হয়েছে ম্যাচটি পাতানো ছিল এবং অধিকতর তদন্তের জন্য ফেডারেশন পুলিশের সাহায্য নিতে পারে। কমিটির সবাই একমত হয়েই তাতে স্বাক্ষর করবে।

No comments

Powered by Blogger.