আবারও পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দাবি

পুঁজিবাজারের বর্তমান তারল্য-সংকট দূর করতে বন্ডের পাশাপাশি শেয়ারেও অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের দাবি করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।
গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতিরা এ দাবি করেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভী, সিএসইর সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ, ডিআরইউয়ের সভাপতি মোস্তাক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, ‘বাজারে বর্তমানে তারল্য-সংকট রয়েছে। এ অবস্থা থেকে কাটিয়ে উঠতে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বন্ডের পাশাপাশি পুঁজিবাজারেও অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা শুনেছেন।’
শাকিল রিজভী আরও বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বন্ডে বিনিয়োগ করলে ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে এটা ঠিক। তবে প্রতিবছর বিনিয়োগকারীকে সরকারের পক্ষ থেকে ১০ শতাংশ মুনাফা ফেরত দিতে হবে। আর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলে সরকারকে কোনো মুনাফা ফেরত দিতে হবে না।
সিএসইর সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদও অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পক্ষে মত দেন। তবে বাজার যাতে আবার অতি মূল্যায়িত না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
সিএসইর সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, ‘প্রথমেই আমাদের একটি লক্ষ্য স্থির করতে হবে। সরকারের একটি নির্দিষ্ট নীতি থাকতে হবে, যা কমপক্ষে পাঁচ মেয়াদি হতে হবে। এই সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন যাতে না হয়, সে বিষয়টি খেয়াল করতে হবে।’
আওয়ামী লীগের আমলে পুঁজিবাজারে ধস নামে কেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে শাকিল রিজভী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজারেও এ ঘটনা ঘটে। সেখানে তো আওয়ামী লীগ বা বিএনপি নেই।’ তিনি বলেন, উত্থান-পতন শেয়ারবাজারের ধর্ম। বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়তে বাড়তে বাজার অতি মূল্যায়িত হয় এবং একপর্যায়ে এ ধরনের ধসের সৃষ্টি হয়। এটা আওয়ামী লীগ বা বিএনপির দোষ নয়।
এ ছাড়া দুই স্টক এক্সচেঞ্জই প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের চাপমুক্ত বলে জানান দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতিরা।
আরেক প্রশ্নের জবাবে দুজনই বলেন, পুঁজিবাজারে কারসাজির অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িত ব্যক্তিদের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে দোষী বলা ঠিক হবে না।
সূচক ও লেনদেন: দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই গতকাল বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বেড়েছে। এর ফলে বেড়েছে সূচক। একই সঙ্গে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে গতকালের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে।
ডিএসইতে সাধারণ সূচক দিন শেষে ৯২ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৯৩৪ দশমিক ১৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৫৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১৭৮টির, কমেছে ৬২টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। স্টক এক্সচেঞ্জটিতে ৮৩১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৩২৫ কোটি টাকা বেশি।
অন্যদিকে সিএসইতে সার্বিক মূল্যসূচক ২৬৬ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ১৬ হাজার ৫১৩ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৯৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১২৮টির, কমেছে ৬০টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে নয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
স্টক এক্সচেঞ্জটিতে গতকাল ৯৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৩১ কোটি টাকা বেশি।

No comments

Powered by Blogger.