লিঙ্কন বর্ণবাদীছিলেন!

দাসপ্রথা অবসানের আন্দোলনের অন্যতম অগ্রপথিক হিসেবে বিবেচিত মার্কিন নেতা আব্রাহাম লিঙ্কনের ঐতিহাসিক গেটিসবার্গ ভাষণ প্রজন্মের পর প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করে আসছে। ওই ভাষণকে অসাম্য ও বর্ণবাদবিরোধী চেতনার অন্যতম উদাহরণ বলে মনে করা হয়। তবে সেই বিশ্বাসের ভিত্তিমূলে আঘাত হেনেছেন দুই মার্কিন গবেষক। তাঁরা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট লিঙ্কন মোটেও বর্ণবাদ বিরোধী নন বরং ঘোর বর্ণবাদী ছিলেন। তিনি কৃষ্ণাঙ্গদের যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে লাতিন আমেরিকায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত কালোদের তখনকার ব্রিটিশ হন্ডুরাসে (বর্তমানে বেলিজ) থাকার ব্যবস্থা করতে তিনি ব্রিটেনকে গোপনে অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্সে অবস্থিত জর্জ ম্যাসন ইউনিভার্সিটির দুই গবেষক ফিলিপ ম্যাগনেস ও সেবাস্টিয়ান পেগ যৌথভাবে লেখা একটি বইয়ে এমনটাই দাবি করেছেন। ‘কলোনাইজেশন আফটার ইমানসিপেশন’ নামের ওই গবেষণাগ্রন্থে তাঁরা বলেছেন, লিঙ্কন উপনিবেশবাদের সমর্থক ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র যে মুহূর্তে আব্রাহাম লিঙ্কনের প্রথম ভাষণের ১৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপন করতে যাচ্ছে, সেই মুহূর্তে এই তথ্য প্রকাশ করা হলো।
ওই দুই গবেষক বলেছেন, ব্রিটিশ ন্যাশনাল আর্কাইভস ও ইউএস ন্যাশনাল আর্কাইভস থেকে উদ্ধারকৃত নথিপত্রের ভিত্তিতে তাঁরা বইটি লিখেছেন।
বইটিতে বলা হয়েছে, ১৮৬২ সালে হোয়াইট হাউসে ‘মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গদের’ উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে লিঙ্কন তাদের যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে মধ্য আমেরিকায় বসতি গড়ার জন্য বলেছিলেন। লিঙ্কন কৃষ্ণাঙ্গদের বলেছিলেন, ‘আপনাদের জাতিগোষ্ঠীর বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনা করে এবং শ্বেতাঙ্গদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আপনাদের কিছু বিষয় ছাড় দেওয়া উচিত।’ তিনি বলেন, যেসব কৃষ্ণাঙ্গ স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করার স্বপ্ন দেখে, তারা ‘স্বার্থপর’।
ওই গবেষকেরা দাবি করেছেন, লিঙ্কন উপনিবেশবাদকে সমর্থন করতেন এবং এরই অংশ হিসেবে তিনি গোপনে ব্রিটেনের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.