আফ্রিদিতেই পাকিস্তানের বদল!

শুরুটা ডানহাতি লেগ ব্রেক বোলার তকমা নিয়ে। সেটা ১৯৯৬ সালের কথা। পরের গল্পটা কমবেশি সবারই জানা। অনুশীলনে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং দেখে একদিন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নামিয়ে দেওয়া হলো তিন নম্বরে। বাজিমাত! মুরালিধরন, ভাসদের পাড়ার বোলার বানিয়ে ফিরলেন সাজঘরে। ততক্ষণে গড়া হয়ে গেছে নতুন ইতিহাস। ওয়ানডেতে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক বনে গেলেন সাহেবজাদা মোহাম্মদ শহীদ খান আফ্রিদি। বিশ্ব ক্রিকেটের বিশাল ক্যানভাসে শহীদ আফ্রিদি নামেই যাঁর পরিচিতি। ৩৭ বলের ওই সেঞ্চুরির পর থেকেই সাহেবজাদার পিঠে ‘বুমবুম আফ্রিদি’র তকমা সেঁটে গেল, আজও যা অটুট।
কালের স্রোতে ১৪টি বছর পেরিয়ে গেছে। সিন্ধু নদে জলও গড়িয়েছে অনেক। সেদিনের সেই টগবগে তুর্কির মাথায় আজ পাকিস্তান অধিনায়কের টুপি। এ বিশ্বকাপে ব্যাটিং-দ্যুতি ছড়াতে না পারলেও বোলিং ও অধিনায়কত্ব দিয়ে মুগ্ধ করেছেন সমর্থকদের। আগের তিনটি বিশ্বকাপে ১২ ম্যাচ খেলে যেখানে মাত্র ৭টি উইকেট তাঁর, সেখানে এবার প্রথম তিনটি ম্যাচেই পেয়েছেন ১৪টি উইকেট।
পাকিস্তানের মতো একটা অস্থির দলের অধিনায়কত্ব সব সময়ই চ্যালেঞ্জের। আফ্রিদি চ্যালেঞ্জটাকে মনে হয় ভালোমতোই উপভোগ করছেন।
টানা তিন ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছে আফ্রিদির দল। অথচ কদিন আগেও কী বিধ্বস্তই না ছিল দলটি। লাহোরে শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়দের ওপর গুলি, স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে তিন প্রধান খেলোয়াড়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আর বিশ্বকাপের অধিনায়ক বিতর্কে পাকিস্তানের আশার সূর্যটা ঢাকা পড়েছিল। কিন্তু আফ্রিদির হাতে নিশান তুলে দিয়ে সব বিতর্ক মুছে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান।
ব্যাটিং নয়, বিশ্বকাপে বোলিংটাই বেশি উপভোগ করছেন আফ্রিদি, ‘বোলিংটাকেই প্রাধান্য দিচ্ছি। উইকেটে বল স্পিন করছে। স্কিডও করছে। সেটা কাজে লাগিয়েই উইকেট পাচ্ছি।’
আফ্রিদির অধিনায়কত্বে পাকিস্তান দলের চেহারাই আমূলে বদলে গেছে বলে মনে করেন পাকিস্তানের অনেক সাবেক তারকা। সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফ যেমন বলেছেন, ‘আফ্রিদির নেতৃত্বে লড়াই করার মতো মনোবল ফিরে পেয়েছে পাকিস্তান। এত ঝক্কি-ঝামেলার পরও দলকে এ অবস্থায় দেখতে পারাটা সত্যিই অসাধারণ। দলটির সাফল্যের গোপন রহস্যই হলো আফ্রিদির অধিনায়কত্ব।

No comments

Powered by Blogger.