বিশ্বকাপ-নগরে ইংল্যান্ড

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কী খেলাটাই না খেলল তারা’—এমন ফিসফাস শোনা গেল টিম বাসের অনেক দূরে দাঁড়ানো ছোট ছোট জটলা থেকে। বাসসহ পুরো বিমানবন্দর ঘিরে রাখা নিরাপত্তাকর্মীদের একজনের আফসোস, ‘কাল ইংল্যান্ড হারলে আমাদের সম্ভাবনা ছিল।’ আফসোস, আক্ষেপ সত্ত্বেও নিজেদের দায়িত্বে কোনো ঘাটতি ছিল না। কার্পণ্য ছিল না ইংলিশদের অভ্যর্থনায়ও।
১১ মার্চ স্বাগতিকদের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে অংশ নিতে ইংলিশ দলকে বহনকারী বিমানটি গতকাল বেলা দুইটায় চট্টগ্রামের মাটি ছোঁয়। এর অন্তত এক ঘণ্টা আগেই বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে গিয়ে উপস্থিত হন চট্টগ্রামের মেয়র এম মন্জুর আলম, চট্টগ্রামের ভেন্যু চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীরসহ অন্যরা। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ছিল অতিথি দলটি। র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীরও সতর্ক প্রহরা ছিল। আড়াইটার দিকে লাল গালিচায় হেঁটে বের হয়ে আসে ইংল্যান্ড দল। মেয়র দলের অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের হাতে তুলে দেন চট্টগ্রাম নগরের প্রতীকী চাবি। তারপর স্কুলের শিক্ষার্থীরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে জানায় তাদের অভ্যর্থনা।
রুদ্ধশ্বাস এক জয়ের পরদিনই দীর্ঘ বিমান ভ্রমণজনিত ক্লান্তি কি ভর করেছিল বিদেশি এই দলটিকে! না করে পারেই না। কিন্তু ওই জয়ের আনন্দের রেশ দেখা গেল তাদের অভিব্যক্তিতে। বাসে উঠেই পর্দা তুলে বাইরে উঁকি দিলেন অ্যান্ডারসন, কলিংউডরা। এর আগেও দলটি দুবার চট্টগ্রামে এসেছে। প্রথমবার ২০০৩ সালে। শেষবার ঠিক এক বছর আগে গত মার্চ মাসে। সেবার ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হেরেছিল ৪৫ রানে।
কিন্তু গত বছরের চট্টগ্রাম আর বিশ্বকাপ নগর চট্টগ্রামের সঙ্গে কিছুটা অমিল খুঁজে পাবেন তাঁরা, এটি নিশ্চিত। সেবার এত নিরাপত্তা ছিল না। বিমানবন্দরের মুখে সাম্পান, পথে পথে লাল-সবুজ পতাকার পাশাপাশি নিজেদের দেশের পতাকা ছিল। নিমতলা ও টাইগার পাস মোড়ের ক্রিকেটার ভাস্কর্য ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ভাস্কর্যও দৃষ্টি এড়ানোর কথা নয়। এই দুই জায়গায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে স্কুলছাত্ররা দুই দেশের পতাকা নেড়ে অভ্যর্থনা জানায় অতিথি ক্রিকেটারদের।
আরেকটি জিনিস তাঁদের নতুন মনে হতেই পারে। বিমানবন্দর থেকে পেনিনসুলা হোটেল পর্যন্ত পুরো সড়কের একপাশ বন্ধ করে সাইরেন বাজিয়ে ছুটে গেছে স্ট্রাউসদের বহনকারী গাড়িবহর। আর পাঁচ-দশ হাত পরপর দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশ।

No comments

Powered by Blogger.