রাবিতে চারুকলার ভাস্কর্য তছনছ করেছে শিক্ষার্থীরাই

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্যের নিরাপত্তা ও যথাযথ সংরক্ষণ না করায় সকল ভাস্কর্য উল্টে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন কতিপয় শিক্ষার্থী। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটায় তারা। এদিকে আজ মঙ্গলবার সকালে এ দৃশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নজরে আসে। পরে অবশ্যই বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্বীকার করে নেয়। জানতে চাইলে ভাস্কর্য বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন অনিক ও ইউসুফ হোসেন স্বাধীন দাবী করেন, ‘রাতে আমাদের বিভাগের ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী নিরাপত্তা বেষ্টানী ও ভাস্কর্য রাখার গ্যালারী না থাকায় আমরা মূর্তিগুলো উল্টে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি। এই প্রতিবাদ বিভাগের উন্নতির জন্যই করেছি, অন্যকোনো উদ্দেশ্য নেই।’ এব্যাপারে ভাস্কর্য বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোস্তফা শরীফ আনোয়র বলেন, ‘আমরা সকালে এই ঘটনা দেখার পরে জরুরি মিটিংয়ে বসেছিলাম। আমরা সেখান থেকে নিশ্চিত হয়েছি বিভাগের ৭-৮জন শিক্ষার্থী এই কাজের সাথে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর এঘটনায় আমরা সামগ্রীকভাবে নিন্দা জানাচ্ছি।’ এসময় তিনি বলেন, ‘কোথাও ভাস্কর্য গ্যালারিতে রাখা হয় না।
সব সময় বাহিরে রাখা হয়, যা দেখে শিক্ষার্থীরা শিখতে পারে।’ এদিকে সরেজমিনে চারুকলা অনুষদে যেয়ে দেখা যায়, প্রায় তিনশতাধিক ভাস্কর্য মাটিতে উল্টো অবস্থায় পড়ে আছে। অনেক ভাস্কর্য আবার উল্টে দেওয়াতে ভেঙ্গে গেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত চিত্রকলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন প্রধান তারেক বলেন, ‘ভাস্কর্য ভেঙ্গে প্রতিবাদ হতে পারে না। আর এটা কোনো প্রতিবাদের ভাষাও নয়। প্রতিবাদের দরকার হলে আমরা সকলে মিলে বিষয়টির প্রতিবাদ করতাম অন্য পন্থায়।’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, ‘সারাদেশে উগ্রবাদী তৎপরতা বাড়ছে। আমরা প্রথম ধারণা করেছিলাম এটা সাথে এই ধারণার সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। কিন্তু শিক্ষর্থীরা এভাবে এমন কাজ করতে পারে না।’ চারুকলা অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো. মোস্তফিজুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বুঝা যাচ্ছে, কতিপয় শিক্ষার্থী চাওয়া-পাওয়ার ক্ষোভের জায়গা থেকে এটা করেছে।’ এদিকে এঘটনায় প্রতিবাদে জানিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

No comments

Powered by Blogger.