উদ্ধার হয়নি ফার্নেসবাহী ওয়াগন- তেল ছড়িয়ে পড়ছে কর্ণফুলী নদীতে

বোয়ালখালী খালে ডুবে যাওয়া তেলবাহী রেলের দুটি ও পাড়ে থাকা একটি ওয়াগন এখনো উদ্ধার করা যায়নি। ডুবে থাকা ওয়াগন থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ছে ৯ কিলেমিটার দূরে থাকা কর্ণফূলী নদীতেও। উল্লেখ, শুক্রবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গোমদন্ডি স্টেশন মাস্টার আবু জাফর আমাদের বোয়ালখালী সংবাদদাতাকে জানায়, শনিবার রিলিফ ট্রেন ৮টি ওয়াগনের মধ্যে ৫টিকে নিয়ে যায়। কাত হয়ে থাকা একটি ওয়াগন থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তেল খালাস করে ড্রামে সংরক্ষণ করেছে। ইঞ্জিন ও ডুবে থাকা দু’টি ওয়াগন আগের মতোই রয়েছে। প্রতিটি ওয়াগনে ৩৩ হাজার ৬৪০ লিটার  ফার্নেস অয়েল রয়েছে।
শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মকবুল হোসেনসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তারা  বলেছেন, ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পড়ায় আশেপাশের এলাকা ও কর্ণফুলী নদীতে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। পানির উপরিতলে থাকা এই তেল জোয়ার-ভাটায় সামনে-পেছনে আসা-যাওয়া করছে। ফার্নেস তেলের আস্তরণ ছড়িয়ে পড়েছে কর্ণফূলী নদী পর্যন্ত। ফলে নদীর মাছ ও জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াগন থেকে তেল অপসারণ না করে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গেলে নদীতে তেল পড়ে পরিবেশ বিপর্যয় হতে পারে এটি মাথায় রেখে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে হচ্ছে। ফলে সময় লাগছে। ওয়াগন উদ্ধারের পর সেতুটি মেরামত করা হবে। এতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে। চট্টগ্রাম-দোহাজারি লাইনে রেল চলাচল বন্ধ আছে। এই পথে প্রতিদিন একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে।
উদ্ধার হয়নি ফার্নেসবাহী ওয়াগন- কর্ণফুলীতে ভাসছে ফার্নেস অয়েল
উদ্ধার হয়নি চট্টগ্রাম দোহাজারী রেললাইনের বোয়ালখালী বেঙ্গুরা এলাকায় রেলওয়ের ব্রিজ ভেঙে লাইনচ্যুত হওয়া চারটি তেলবাহী ওয়াগন। এর ফলে হারগেজি খালে ছড়িয়ে পড়ছে ওয়াগনে থাকা ফার্নেস অয়েল। কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে এ খালটির সরাসরি সংযোগের ফলে কর্ণফুলী নদীর পানিতে মিশতে শুরু করেছে ওই ফার্নেস অয়েল।
শুক্রবার বিকেলে দোহাজারি যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রেল কর্তৃপক্ষ ছয় সদস্যবিশিষ্ট পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি দুই প্রকৌশলীকে বরখাস্ত করেছে। কর্ণফুলী নদীতে এ ফার্নেস অয়েল ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন। ধলঘাট স্টেশন মাস্টার অনুপম সেন জানান,"ডুবে যাওয়া ওয়াগন থেকে জ্বালানি তেল বের করতে না পারায় এবং উদ্ধার কাজ বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম-দোহাজারি লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দোহাজারি পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য আটটি ওয়াগন ফার্নেস অয়েলবাহী চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলি থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ওয়াগনে প্রায় ২৬ হাজার ৮০০ লিটার ফার্নেস অয়েল রয়েছে।"
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের ডিভিশনাল ট্রান্সপোর্টেশন অফিসার ফিরোজ ইফতেখার জানান,"বোয়ালখালীর বেঙ্গুরা রেলওয়ের ২৪ নং সাকিরাপুলে ফার্নেস অয়েলবাহী ট্রেনের তিন ওয়াগনসহ ইঞ্জিনটি লাইনচ্যুত হয়। এতে দুইটি ওয়াগন খালের পানিতে পড়ে গেলে সেখান থেকে আশেপাশের এলাকায় বিপজ্জনকভাবে তেল ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এখনও নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে ওই ছড়িয়ে পড়া তেল।"
পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান জানান, ডুবে যাওয়া ওয়াগন থেকে বিপুল পরিমাণ ফার্নেস অয়েল খালের সীমানা পেরিয়ে কর্ণফুলীতে ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থার উন্নতির দ্রুত চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কারণ চাষাবাদের জমিতে তেল ছড়িয়ে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে।

No comments

Powered by Blogger.