চট্টগ্রামে মামলার ফাঁদে বিএনপি নেতারা by মহিউদ্দীন জুয়েল

মামলার ফাঁদে প্রথম সারির বিএনপি নেতারা। বাড়িতে বাড়িতে চলছে তল্লাশি। গ্রেপ্তার অভিযান। কিন্তু এর মধ্যেও শক্ত অবস্থানে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। চালিয়ে যাচ্ছেন মিছিল-সমাবেশ। নিয়মিতভাবেই করছেন সব দলীয় কর্মসূচি। চট্টগ্রাম বিএনপির মাঠপর্যায়ে দেখা গেছে এমনই চিত্র। গত কয়েক দিন ধরেই বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন জেলা ও আশপাশের ১২টি থানা, উপজেলার নেতাকর্মীরা। তারা দলবেঁধেই প্রতিবাদ করছেন সরকারের নানা সিদ্ধান্তের। সর্বশেষ গত সোমবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ব্যানার হাতে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে বিএনপির শ’ শ’ নেতাকর্মীকে।
খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারে গুলশান কার্যালয়ে তল্লাশির প্রতিবাদে হাটহাজারী, পটিয়া, সীতাকুন্ড, পটিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে মিছিল-সমাবেশ করেছেন তারা। তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, নগরে বিএনপির প্রথম সারির অনেক নেতাই এখন রয়েছেন চুপচাপ। কারণ হিসেবে তারা জানান, অযথা মামলায় জড়িয়ে  সরকার পুলিশ দিয়ে তাদের বেকায়দায় রেখেছে। এই অবস্থায় সেখানে মিছিল-সমাবেশ করলেই নেতাদের গাড়ি ভাঙচুর কিংবা পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দেয়া হচ্ছে। গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের লক্ষ্যে ৭২ ঘণ্টা হরতালের ১ম দিনে পুলিশি পাহারা উপেক্ষা করে হাটহাজারীতে গণমিছিল করেছে সেখানকার বিএনপির নেতাকর্মীরা। গত ১লা মার্চ বিকালে ডাক বাংলো এলাকা থেকে উত্তর জেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও  পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুস শুক্কুরের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বাসস্টেশন দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে সভার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এই সময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হোসেন, ফরিদ সওদাগর, মো. আবদুল করিম, আবু তৈয়ব সওদাগরসহ অন্তত ২০ জন বক্তব্য দেন। জানতে চাইলে নেতৃত্ব দেয়া পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুস শুক্কুর বলেন, নগরে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা কিছুটা দুর্বল দেখা গেলেও মাঠপর্যায়ে আমরা সক্রিয় রয়েছি। তবে সেখানেও বেশিদিন এমন অবস্থা থাকবে না। পুলিশ এই মুহূর্তে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। কিন্তু উপজেলাগুলোতে এসব মামলা কেউ তেমন আমলে নিচ্ছেন না।
একই রকম চিত্র দেখা গেছে পটিয়ায়। সেখানকার বিএনপির নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এই সময় মিছিলটির নেতৃত্বে ছিলেন সভাপতি মফজল আহমদ চৌধুরী। কর্মসূচিতে অংশ নেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মঈনুল আলম ছোটন, পৌরসভা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি কবিয়াল মুহাম্মদ ইউছুপ, বিএনপি নেতা ফরিদুল আলম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আবুল ফয়েজসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
জানতে চাইলে মফজল আহমদ চৌধুরী বলেন, সব ধরনের বাধা উপেক্ষা করেই আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। আগামীতেও একইভাবে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। হরতাল-অবরোধে সক্রিয় রয়েছে বিএনপির শ’ শ’ নেতাকর্মীরা। সমাবেশ থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীরা অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার জোর দাবি জানান। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি এনামুল হক এনামের মুক্তির দাবি করেন। 
চট্টগ্রাম জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, কেবল তৃণমূল পর্যায় নয়, শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও পাড়াতেও সক্রিয় হচ্ছেন অনেক নেতাকর্মী। গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি আত্মগোপনে থাকা কয়েকটি মামলার আসামি যুবদল নেতা ইয়াছিন চৌধুরী লিটন নগরীর কোতোয়ালি থানার বাগমনিরাম ওয়ার্ডের ব্যাটারিগলি এলাকায় ১৫-২০ জন কর্মী নিয়ে ঝটিকা মিছিল করেন।

No comments

Powered by Blogger.