মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অবস্থান জানলো ইইউ

দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের বক্তব্য শুনলেন সফররত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যরা। কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিশ্চিয়ান দান প্রেদার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তারা বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান। সরকারের তরফেও তাদের বিস্তারিত ব্রিফ করা হয়। পররাষ্ট্র ভবনের ওই আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামও অংশ নেন। ইইউ সংসদের তিন এমপিসহ ৬ সদস্যের সফররত প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের মানবাধিবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছে তারা। সরকার, বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃত্ব, নাগরিক সমাজ ও শ্রম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করছেন। এরই মধ্যে বিএনপি জোটের শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবার সফরের প্রথমদিনেই তারা বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে গতকালের বৈঠক ছাড়াও সফরকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হকের সঙ্গে তাদের বৈঠক হবে। ইইউ প্রতিনিধিরা এখনও গণমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। তাদের তরফে কোন বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ হয়নি। গতকালের বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখতে আসা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এ নিয়ে কোন উদ্বেগের কথা সরকারকে জানাননি দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলকে বিএনপি-জামায়াত জোটের চলমান অবরোধে নাশকতার চিত্র সংবলিত একটি ভিডিও দেখানো হয়। নাশকতা বন্ধে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়েও তাদের অবহিত করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়তে বিএনপিকে আহ্বান জানিয়ে আসা ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগের অবস্থানেই রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নাশকতার চিত্র দেখে তারা বলেছেন সেই আহ্বান এবারও জানিয়ে যাবেন। বিচারবহির্ভূত যে কোন ধরনের হত্যাকাণ্ডসহ  দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি সরজমিন পর্যবেক্ষণে আসা পার্লামেন্টারিয়ান ক্রিশ্চিয়ান দান  প্রেদা (রোমানিয়া)-এর নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের ইইউ সংসদীয় প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- ক্যারল ক্রাসকি (পোল্যান্ড) ও ইয়োসেফ ভেইডেনহোলজার (অস্ট্রিয়া)। গত দুই দশকের মধ্যে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপ-কমিটির এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ইইউ পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধি দলের ওই সফরটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই সময়ে তাদের না এসে পরবর্তী যে কোন সময়ে আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল সরকারের তরফে। কিন্তু ব্রাসেলস তাতে রাজি হয়নি। প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য ক্রিশ্চিয়ান দান প্রেদা গত বছর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত দুই প্রস্তাবের অন্যতম প্রস্তাবক। গুরুত্বপূর্ণ ওই প্রতিনিধিরা ঢাকা মিশন শেষে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন।

No comments

Powered by Blogger.