টাকা পাচার মামলার তদন্ত

সোমবার যুগান্তরে অর্থ পাচার সংক্রান্ত দুটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এর একটি হচ্ছে, সেকেন্ড হোমের মালিকদের অর্থের সন্ধানে সরকার। আরেকটি হচ্ছে, অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাচার- তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অর্থশাস্ত্র পরিচালিত হয় কিছু নিয়মনীতি মেনে। অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবে সমাজনীতি, রাজনীতি ইত্যাদির মতোই অর্থনীতি নীতি-নৈতিকতা ও নিয়মের মধ্যে পরিচালিত হয়ে থাকে। যখন তা লংঘিত হয় তখনই ঘটে নানা বিপর্যয়। যেহেতু বিশ্বব্যবস্থা অর্থের নিগড়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা, সেহেতু অর্থনৈতিক যে কোনো অনিয়মই দুর্নীতির গর্ভ থেকে উদ্ভূত হয়। যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদ দুটিও আর্থিক অনিয়মজাত। নিয়ম থাকলে অনিয়মও ঘটে; কিন্তু কিছু কিছু অনিয়ম উদ্বেগজনক এ কারণে যে, এসব অনিয়ম সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্ষতির কারণ হয়। প্রকাশিত সংবাদ দুটি সে কারণেই উদ্বেগের বটে; যার জন্য সেকেন্ড হোমের মালিকদের অর্থ পাচারের ঘটনা তদন্তে সরকারের তিনটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দুদকের পাশাপাশি সিআইডি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে এ কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাচারের ঘটনা যেমন ঘটছে, তেমনি দেশের কোনো কোনো ব্যাংকে জমা হয়েছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। অর্থের এই স্থানান্তরে অনেক রহস্যময়তা থাকে আর সেটি সাধারণ মানুষের জন্য কল্যাণকর নয়, যা বলাই বাহুল্য। ব্যাংকিং খাতকে ব্যবহার করে এ ধরনের আর্থিক কর্মকাণ্ড দেশের অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং উপর্যুপরি অনিয়মের বিস্তৃতি ঘটিয়ে থাকে।
বিষয়টি সরকারের নজরে আসা এবং বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের আওতায় আনার সিদ্ধান্তটি খুবই সময়োপযোগী। কোনো অর্থই যেন দেশ ও দেশের মানুষের জন্য অনর্থ কর্মকাণ্ডের কারণ হতে না পারে সেজন্য আর্থিক এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করা প্রয়োজন এবং তাদের এ অপরাধের জন্য প্রচলিত আইনে শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে ভবিষ্যতে যাতে কেউ এমন অনিয়মে না জড়ান, সেটা নিশ্চিত করা জরুরি।

No comments

Powered by Blogger.