টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন দরকার

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন দরকার। কাঙ্ক্ষিত এসএমই প্রবৃদ্ধি অর্জনে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তার মাধ্যমে অধিকতর সুবিধা প্রদান করতে হবে। এছাড়া রাজস্ব ও আর্থিক নীতির গভীর সমন্বয় দরকার। গত বুধবার জাপানের টোকিওতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও জাইকা’র যৌথ আয়োজনে এ সম্মেলনের ‘এসএমই উন্নয়নের প্রসার’ নামক অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। জাইকা’র প্রেসিডেন্ট আকিহিতো তানাকা এবং আইএমএফ’র ডিএমডি নাউকি শিনোহারা যৌথভাবে সম্মেলনটি উদ্বোধন করেন। এসময় জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক, মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী, এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা, বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, একদিকে প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল, অপরদিকে কমছে মূল্যস্ফীতি। কমছে দারিদ্র্যতা। বাড়ছে মানুষের আয়। আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে দেশী-বিদেশী সব বাণিজ্যিক ব্যাংক পরিবেশবান্ধব ও দায়িত্বশীল ব্যাংকিং করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করছে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতিকে মূল ব্যাংকিং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে কাজ করছে। তিনি বলেন, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে এসএমই খাতের গুরুত্ব অনেক। বাংলাদেশ এসএমই খাতকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করছে। ব্যাংকগুলোও এসএমই খাতে বিনিয়োগ করে ভাল মুনাফা করছে। এতে করে তাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী হচ্ছে। গভর্নর বলেন, ব্যাংকের এসএমই খাতে বিনিয়োগের ওপর ব্যাসেল নীতিমালায় অধিকতর উচ্চহারে মূলধন সংরক্ষণ রাখার নিয়ম থেকে মনে হয়, এ খাতে বিনিয়োগ বৃহত্তর করপোরেটে বিনিয়োগের চেয়ে ঝুঁকিতর। এদিক থেকে এসএমই খাতে বিনিয়োগ কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে অনুৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে।
তবুও জাপানিজ হোমটাউন ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট ফান্ডগুলো এবং স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্য বিকল্প প্রতিষ্ঠানগুলো (বাংলাদেশে অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো) বিভিন্ন প্রোডাক্ট উদ্ভাবনের মাধ্যমে এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু দেশে আংশিক ঋণ গ্যারান্টি ব্যাংকের এসএমই অর্থায়নের ঝুঁকি হ্রাসে ভূমিকা রাখছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ডিএফআইডি’র সহায়তায় বাংলাদেশে এরূপ একটি গ্যারান্টি স্কিম শিগগিরই চালু করা হচ্ছে। ‘ফ্যাক্টরিং’ বা এসএমই পণ্য বাণিজ্য এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সরবরাহ প্রক্রিয়ার ওপরের দিকের ক্রেতাদের কাছে বাকিতে পণ্য বিক্রির বিপরীতে তারল্য সরবরাহও বাংলাদেশের এসএমই খাতকে সহায়তা করছে। এর ফলে এসএমই গ্রাহকদের সরাসরি অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তাও হ্রাস পাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.