দেশঘাতী তৎপরতা থেকে বিরত থাকুন- ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবুন

যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (পিডব্লিউসি) ক্রয়ক্ষমতার সক্ষমতা (পিপিপি) প্রতিবেদনে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৩তম বড় অর্থনীতির দেশ হবে বলে যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, তাতে অতিশয়োক্তি থাকতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে নাকচ করার উপায় নেই। আমাদের আছে বিপুল জনশক্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদ। কিন্তু জনশক্তিকে সম্পদে পরিণত করা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহারের জন্য যে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই পরিকল্পনা দরকার, পূর্বাপর কোনো সরকারই তার প্রতি যথেষ্ট মনোযোগী হয়নি। আন্তর্জাতিক প্রায় সব গবেষণা প্রতিবেদনেই বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনার বিষয়টি নানা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) সূচকেও বাংলাদেশের সাফল্য কম নয়, সাপ্তাহিক দি ইকোনমিস্ট যার নাম দিয়েছে উন্নয়ন ধাঁধা। বাংলাদেশ নিয়ে বহির্বিশ্বে যখন এসব আশার বাণী উচ্চারিত হচ্ছে, তখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংঘাতময়। অব্যাহত হরতাল-অবরোধে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, যা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিতে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, তাঁদের যুদ্ধংদেহী মনোভাবের কারণে দেশ খাদের কিনারে এসে পৌঁছেছে। কিন্তু এ-ও সত্য যে রাজনৈতিক নেতৃত্বের এই আত্মঘাতী যুদ্ধে আমরা দেশের আর্থসামাজিক সম্ভাবনাকে ধ্বংস হয়ে যেতে দিতে পারি না। ইতিমধ্যে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ চলমান অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে। আশা করি, রাজনৈতিক নেতৃত্বের কর্ণকুহরে এসব সতর্কবার্তা প্রবেশ করবে এবং তাঁরা দেশঘাতী তৎপরতা থেকে বিরত থাকবেন। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ অবিবেচক রাজনীতির নিষ্ঠুর বলি হোক, তা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

No comments

Powered by Blogger.