প্রয়োজন অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশ- তবু ডিসিসি নির্বাচন হোক

গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) নির্বাচনের বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, খোদ প্রধানমন্ত্রী ডিসিসি নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন। সীমানা নির্ধারণ-সংক্রান্ত জটিলতারও অবসান ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এখন আর ডিসিসি নির্বাচন করতে আইনি বাধা থাকার কথা নয়।
প্রধানমন্ত্রী যখন ডিসিসি নির্বাচনের তাগিদ দিলেন, তখন দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক, এ কথা বলা যাবে না। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট আহূত লাগাতার অবরোধের ৪৪ দিন পার হয়েছে। তদুপরি আছে দফায় দফায় হরতাল। তাই প্রায় দেড় কোটি জনসংখ্যা-অধ্যুষিত ঢাকা মহানগরের দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য আইনি বাধা উঠে যাওয়াই যথেষ্ট নয়। নির্বাচনের অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশও জরুরি। বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধ চলা অবস্থায় এই কাজটি যে কঠিন হবে, সেটা সরকারের নীতিনির্ধারকেরাও নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন।
কিন্তু একই সঙ্গে এটাও মানতে হবে যে ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে আর বিলম্ব করার সুযোগ নেই, তবু নির্বাচন হতে হবে। এখন সরকার যদি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়, তাহলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর আগেই এর পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বিএনপি ইতিমধ্যে ডিসিসি নির্বাচনের বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, চলমান রাজনৈতিক সংকট থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যেই সরকার ডিসিসি নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু করেছে। স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে না হলেও এর রাজনৈতিক দিকটি, বিশেষ করে ডিসিসির মতো নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের প্রত্যাশা, ডিসিসি নির্বাচন-প্রক্রিয়া শুরুর আগেই রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হবে। সে ক্ষেত্রে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলেরও নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার যুক্তি থাকবে না। দ্রুততম সময়ে ডিসিসির নির্বাচন হোক, সেটি যেমন জনগণ আশা করে, তেমনি এ-ও প্রত্যাশিত যে এই নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক।

No comments

Powered by Blogger.