কে হচ্ছেন আইজিপি? by দীন ইসলাম

কে হচ্ছেন পরবর্তী আইজিপি? এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-এর মহাপরিচালক (ডিজি) হচ্ছেন কে? এ দুই পদ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনে এখন জোর আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুই পদে নিয়োগ পেতে পুলিশে জোর লবিং শুরু হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩১শে ডিসেম্বর বর্তমান আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারের মেয়াদ শেষ হবে। এর আগেই সরকারকে নতুন আইজিপি বাছাই করতে হবে। ২০১০ সালের ৩০শে আগস্ট তিনি আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর থেকে টানা চার বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে একই দিনে ৩১শে ডিসেম্বর র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমানের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই এ দুই পদে নতুন নিয়োগ দিতে হবে। এ দুই শীর্ষ কর্মকর্তা ছাড়াও অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রয়) আমির উদ্দিন এবং ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ডিআইজি) আবদুল জলিলসহ আরও কয়েক কর্মকর্তা অবসরে যাচ্ছেন। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে থাকা পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা-ও সহসাই অবসরে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাসান মাহমুদ খন্দকারের ভূমিকায় সরকারের উচ্চ পর্যায় সন্তুষ্ট। এ কারণে সরকারের নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ তাকে আরও কিছুদিন এই পদে রাখার পক্ষপাতী। এটা হলে তার মেয়াদ এক দফা বাড়তে পারে। বর্তমান আইজিপি’র মেয়াদ না বাড়লে আইজিপি হওয়ার দৌড়ে আছেন অ্যাডিশনাল আইজি (প্রশাসন) একেএম শহীদুল হক, অ্যাডিশনাল আইজি (সিআইডি) জাবেদ পাটোয়ারী, অ্যাডিশনাল আইজি (এসবি) মোখলেছুর রহমান ও ঢাকা  মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমেদ। এদের মধ্যে একেএম শহীদুল হক বর্তমানে পুলিশের দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা। এদের মধ্যে অ্যাডিশনাল আইজি (প্রশাসন) একেএম শহীদুল হক ও অ্যাডিশনাল আইজি (সিআইডি) জাবেদ পাটোয়ারী গ্রেড-১ কর্মকর্তা। পুলিশ প্রশাসনে দীর্ঘদিন তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমান ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ-ও দেশে ও বিদেশে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। ডিএমপি কমিশনার হিসেবেও অনেক দিন ধরে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিরোধী দল ও হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের বিরূপ পরিস্থিতিতেও শক্তভাবে সব কিছু সামাল দিয়ে তিনি সরকারের নেকনজরে রয়েছেন। এ তিন জনের বাইরে আইজিপি হওয়ার দৌড়ে মোখলেছুর রহমান কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন। এদিকে আগামী বছরের শুরুতে সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করেছে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট। এই আন্দোলন মোকাবিলার বিষয়টিও নতুন আইজিপি নিয়োগ বা বর্তমান আইজিপি’র মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনুঘটক হতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। সরকারের একটি পক্ষ বলছে, বর্তমান আইজিপি বিভিন্ন সময় প্রতিকূল পরিবেশে নানা সিদ্ধান্ত প্রতিপালন করে সরকারকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তাই তাকে আবার এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলের কাছে। ৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তাদের গ্রুপটি চাইছে, বর্তমান আইজিপি ফের এক বছরের জন্য নিয়োগ পান। তাহলে এ ব্যাচ থেকে পরবর্তী আইজিপি হওয়ার পথ সুগম হয়। পুলিশ প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে যোগ্য মনে করবেন তিনিই হবেন পরবর্তী আইজিপি। এক্ষেত্রে পদস্থ কর্মকর্তাদের সুপারসিড করে সরকারের পছন্দের পুলিশ কর্মকর্তাকে আইজিপি করা হতে পারে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে ওই লাভ-ক্ষতির হিসাব নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।

No comments

Powered by Blogger.