বাংলাদেশী অভিবাসী বিতাড়নে আসামকে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা

বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসী প্রশ্নে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৭১-এর ২৫শে মার্চের পর ভারতে যাওয়া বাংলাদেশীদের শনাক্ত করে বিতাড়িত করার কাজ বেগবান করতে আসাম সরকারকে আরও ট্রাইব্যুনাল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার আদালত গুয়াহাটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ৬৪টি ট্রাইব্যুনাল  গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ট্রাইব্যুনাল গঠনের ৬০ দিনের মধ্যে তা সক্রিয় করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আসামে এখন এমন ৩৬টি ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইকোনোমিক টাইমস। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আদালতের নতুন এ রায়ে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসী প্রসঙ্গে নতুন করে বিতর্কের সূত্রপাত হতে পারে। আসাম চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৬৬ সালের আগে যে সব ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন তাদেরকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পক্ষান্তরে বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ১৯৭১-এর ২৫শে মার্চের পর ভারতে পাড়ি দেয়া বাংলাদেশীরা। ওই তারিখের পরে ভারতে যাওয়া যে সব বাংলাদেশীর নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে তারা কমপক্ষে ১০ বছর ভারতে থাকার প্রমাণ দেখাতে না পারলে তাদের নাম বাদ দেয়ার আদেশ দিয়েছে আদালত। অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করতে তৎপরতা বৃদ্ধি আসাম রাজ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। আসামে বিভিন্ন সময় স্থানীয় বোরো ও মুসলমানদের মধ্যে জাতিগত সংঘাতে শ’ শ’ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। মুসলমানদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী বলে আখ্যায়িত করে থাকে। সুপ্রিম কোর্ট এছাড়াও বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপনের জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে সীমান্তে টহল বৃদ্ধি এবং ঢাকার সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে দেশে ফেরত পাঠানোর বর্তমান প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার নির্দেশ দিয়েছে। আসামের জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ১১ মাসের সময় বেঁধে দিয়েছে আদালত। আসামে বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর প্রবেশ রাজ্যের সাংস্কৃতিক কাঠামোর জন্য হুমকিস্বরূপ বলে অভিমত দেয় সেখানকার নাগরিক সম্প্রদায় ও বিভিন্ন দল। আদালত বলেছেন, তাদের এ উদ্বেগ উপেক্ষা করার অর্থ হবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এড়িয়ে যাওয়া। সীমান্তে টহল বৃদ্ধি, কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন এবং অবৈধ অভিবাসী শনাক্তকরণে আরও ট্রাইব্যুনাল গঠন- এ তিনটি বিষয়ে তিন মাস পর অগ্রগতির একটি রিপোর্ট দাখিল করতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালতের একটি বেঞ্চ। এর আগে আদালত কেন্দ্রীয় রাজ্য সরকারকে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও ফ্লাডলাইট স্থাপন এবং অনুপ্রবেশ প্রতিহত করার নির্দেশ দিয়েছিল।

No comments

Powered by Blogger.