মিডিয়ায় অস্থিরতা

দুঃসময়ে সংবাদকর্মীরা। হঠাৎ করে বেড়ে গেছে অস্থিরতা। বন্ধ হয়ে গেছে দু’টি সংবাদপত্র। বেকার হয়ে পড়েছেন কয়েক শ’ সংবাদকর্মী। আরও কয়েকটি মিডিয়া হাউজেও চলছে অস্থিরতা। এ সব সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরাও আতঙ্কে রয়েছেন। পুরো সংবাদ মাধ্যম জগতেই চলছে এক ধরনের হতাশা। বেশ কয়েকটি নতুন টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন দেয়া হলেও এগুলো আলোর মুখ দেখছে না। উল্টো বর্তমানে প্রচারে থাকা কয়েকটি টিভি চ্যানেলের মালিক সার্বিক পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেকেই মালিকানা ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। অর্থনৈতিক দিক ছাড়াও সংবাদ মাধ্যমকে আরও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। গত কয়েক বছরে টকশো ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেলেও এসব আলোচনা অনুষ্ঠান এখন এক ধরনের অতিথি সঙ্কটে ভুগছে। জনপ্রিয় বেশ কয়েকজন টিভি আলোচকের ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। এরই মধ্যে দুই জন টকশো আলোচক দেশ ত্যাগ করেছেন। অন্যদিকে, কাদের আলোচনায় আনতে হবে সে তালিকাও রয়েছে। সংবাদপত্রগুলোও এক ধরনের চাপে রয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় দৈনিক বর্তমান ও অর্থনীতি প্রতিদিন। ২০১৩ সালের ২রা জুলাই বিরাট অঙ্কের বেতন-ভাতায় সাংবাদিক নিয়োগ দিয়ে বাজারে আসে দৈনিক বর্তমান। এর মালিক কল্যাণপুর মিজান টাওয়ারের মিজানুর রহমান। শুরুতে পত্রিকাটির সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন বিশিষ্ট  লেখক, সাংবাদিক রাহাত খান। পরে তিনি পদত্যাগ করেন। পত্রিকাটির প্রকাশক মিজানুর রহমান দুর্নীতি ও  হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে দায়ের করা মামলায় কারাগারে আছেন। মালিক কারাগারে থাকায় আর্থিক সঙ্কটে পত্রিকাটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। যদিও বন্ধ করে দেয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোন আলোচনা করা হয়নি। তবে সাংবাদিকদের এক মাসের বকেয়া পাওনা এরই মধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি পাওনা পরিশোধ করতে মালিক পক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পত্রিকাটির একজন সাংবাদিক। অন্যদিকে, ‘বর্তমানে’র আগে অর্থনীতি প্রতিদিন বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। গত ২৬শে নভেম্বর পরিচালনা পর্ষদের সভায় পত্রিকাটি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। এ পত্রিকাটি বন্ধের পেছনেও অর্থনৈতিক কারণকেই উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রীন রোড থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকাতেও অস্থিরতা চলছে। কয়েকজন সংবাদকর্মীকে ছাঁটাই করা নিয়ে এ অস্থিরতা তৈরি হয়।  আওয়ামী লীগের বিগত আমলে সরকার আমার দেশ, দিগন্ত টিভি এবং ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দেয়। দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভি চালু করতে কয়েক দফায় আশ্বাস দেয়া হলেও তার বাস্তবায়ন আর হয়নি। এ তিনটি সংবাদ মাধ্যমের বিপুল সংখ্যক কর্মী এখনও বেকারত্বের জীবন যাপন করছেন। ওদিকে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এবং যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামী ৫ই জানুয়ারি তাদের আপিল বিভাগে হাজির হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.