তারেকের বিরুদ্ধে পাঁচ মামলা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির সিনিয়ির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় তার  বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানকে কটূক্তি করায় গতকাল কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নাটোর ও ঢাকার হাকিম আদালতে মামলাগুলো দায়ের করেন আওয়ামী লীগ সমর্থক ৫ ব্যক্তি। এছাড়া সিরাজগঞ্জে তার নামে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ঢাকার মহানগর হাকিম ইউনূস খানের আদালতে করা মানহানি মামলার বাদী আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল তার আর্জিতে মানহানির পাশাপাশি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনলেও এ ধরনের মামলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয় বলে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আদালত আমলে নেয়নি। বাদীর অভিযোগ, গত সোমবার লন্ডনের একটি অনুষ্ঠানে তারেক বঙ্গবন্ধুকে রাজাকার বলায় মানহানি হয়েছে। এ মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ঢাকার আদালতে একই অভিযোগে আরেকটি মামলা করেছেন হকার্স লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল  মান্নান। তারেক রহমানের পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মো. নাসিরউদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী ও কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাজেদুর রহমানকেও বিবাদী করেছেন তিনি। তারাও সেদিন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মহানগর হাকিম মারুফ হোসেনের আদালতে এ অভিযোগের বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে জানান, চট্টগ্রামে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি। গতকাল সকালে মুখ্য মহানগর হাকিম মশিউর রহমান চৌধুরীর আদালতে  মামলাটি করা হয়। পরে বিচারক কোতোয়ালি থানার ওসিকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। ছাত্রলীগের নেতারা জানান, তারেক রহমানের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশে গতকাল সকালে মামলাটি করা হয়। সেখানে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমুসহ চার নেতাকে সাক্ষী করা হয়েছে। ২৭শে ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছে আদালত। এদিকে নগর কোতোয়ালি থানার একটি সূত্র জানায়, মামলা দায়েরের পরপরই চট্টগ্রামে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রলীগ নেতারা।
নাটোর প্রতিনিধি জানান, নাটোর আদালতে এক শ’ কোটি টাকার মানহানির মামলা করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় উপ-সম্পাদক গুরুদাসপুর উপজেলার খাকড়াদহ গ্রামের আহম্মদ আলী মোল্লা। মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান মুন্নি আগামী ২২শে ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেন।
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে জানান, গতকাল কুমিল্লার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলি আদালতে মানহানির মামলা করেছেন মহানগরীর বাগিচাগাঁওয়ের সুভাষ নন্দীর ছেলে অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী বাবু। মামলার বাদী ও আদালত সূত্রে জানা যায়, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ১লা মার্চের মধ্যে আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছেন। আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক রানা আহম্মেদের পক্ষে জেলা জজ আদালতের আইনজীবী মোর্শেদুল ইসলাম তারেক রহমানের নামে গতকাল সকালে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। আইনজীবী মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, জনস্বার্থে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানায় উকিল নোটিশটি দেয়া হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে চিঠির জবাব না দেয়া হলে পরে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, সোমবার বিজয় দিবস উপলক্ষে লন্ডন বিএনপি আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় তারেক দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ৭ই মার্চ  সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসারদের নিয়ে যুদ্ধ শুরু করতেন, তাহলে যে ‘সামান্য সংখ্যক’ পাকিস্তানি সৈন্য তখন ছিল, তাদের সহজেই পরাজিত করা যেতো, প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেক কমানো যেতো। এই সব কিছু জানার পর এর জন্য আমরা এককভাবে কাকে দায়ী করতে পারি  শেখ মুজিবকে। এবং আমরা তাকে যেভাবে রাজাকার বলেছি, আমরা তথ্য প্রমাণ সত্য দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে তাকে বলেছি- রাজাকার। আমরা সত্য ঘটনাবলীর ভিত্তিতে বলেছি তিনি ছিলেন পাকবন্ধু।

No comments

Powered by Blogger.