এবার ব্যর্থ হলে ঢাকার নেতাদের বাড়ি ঘেরাও

বিএনপির বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কনভেশনে আগত দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের সাবেক ভিপি, জিএস ও ছাত্রদলের সাবেক নেতারা। তাদের অভিযোগের তীর ছিল ঢাকা মহানগরের দিকে। বিগত আন্দোলনে মহানগর পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়ায় এর তীব্র সমালোচনা করেছেন তারা। অনেকে বলেন, আন্দোলনে তৃণমূলের নেতারা মাঠে থাকলেও ঢাকাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা আত্মগোপনে থেকে নিজেদের সম্পদ রক্ষা করছেন। এবার ব্যর্থ হলে ঢাকা মহানগর নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেন তারা। চাকসু সাবেক এজিএস মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, ঢাকা নেতাদের এমনভাবে মাঠে নামতে হবে যেন আগামী ৫ জানুয়ারির পর দেশ খালেদা জিয়ার কথায় চলে। টাঙ্গাইল জেলার নেতা ফরহাদ ইকবাল বলেন, ঢাকার নেতাদের বলতে হবে তারা রাজপথে থাকবেন কিনা? তৃণমূলে আমরা প্রস্তুত। এবার ঢাকার নেতাদের সংগঠিত হতে হবে।
ঢাকা মহানগরকে শক্তিশালী করতে সংগ্রাম কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলার নেতা মোতাহার হোসেন। খুলনার সফিকুল আলম তুহিন বলেন, খালেদা জিয়া গুলশানে বাসভবনে অবরুদ্ধ আর তারেক রহমান বিদেশে নির্বাসনে থাকবেন- এটা আমরা দেখতে চাই না। যশোরের সাবেরুল হক সাবু বলেন, এখানে আপস নয়, লড়াই করতে হবে। ৫ জানুয়ারির আন্দোলন ঘিরে ঢাকার নেতারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি।
ইডেন কলেজের সাবেক ভিপি ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খান বলেন, ৫ জানুয়ারিতে হেরে যাওয়ার জন্য শেখ হাসিনা দায়ী নয়, আমরাই এর জন্য দায়ী। ২৪ বছর ধরে রাজনীতি করছি, সামনের কাতারে থাকার চেষ্টা করেছি। দুঃখ হয়, গত তিন বছরেও ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। অথচ প্রায় ৫০ জনের মতো লোক প্রতিনিয়ত ম্যাডামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, গুটিকয়েক নেতা দলকে কুক্ষিগত করে রাখবে এটি হবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ৫ জানুয়ারির আন্দোলনে ঢাকার নেতারা ব্যর্থ হয়েছেন। এবার ব্যর্থ হওয়া যাবে না। এবার গাফলতি করলে প্রথমে তাদের বাড়ি ঘেরাও করা হবে।
সাবেক সংসদ সদস্য আসিফা আশরাফী পাপিয়া কনভেনশনের আয়োজকদের কাছে জানতে চান- আন্দোলনের ডাক দিলে মাঠে থাকবেন কিনা? পুলিশের লাঠির বাড়ি খেয়ে স্কয়ার, ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে লাশ হতে পারবেন কিনা? ৯০ দশকের মতো রাজপথে থাকতে পারবেন কিনা? বরিশালের সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুল হক নান্নু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক দিন ধরে গুলশানে যাই না। কারণ সেখানে ব্যবসায়ীদের মর্যাদা বেশি। আর তারেক রহমানকে যারা গালি দেয় তাদের মূল্যায়ন করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি শহিদুল হক মিলন বলেন, তৃণমূলে গিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। ঢাকা থেকে কমিটি গঠন করে চাপিয়ে দিলে আন্দোলন সফল হবে না।
তৃণমূল নেতাদের এসব বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নেতারা বিব্রত হয়েছেন। তারা বারবার বক্তাদের নিজেদের সমালোচনা না করে সরকারবিরোধী আন্দোলন কী করে সফল করা যাবে সেই বক্তব্য রাখার অনুরোধ করেন। কিন্তু তা না শুনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস বলেন, সেসময় মহানগরের দায়িত্বে যারা ছিলেন ব্যর্থতা তাদের। আমরাও এ ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারি না। মহানগরের পক্ষ থেকে ব্যর্থতার জন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি।

No comments

Powered by Blogger.