জিহাদের জন্য কান্না

শুক্রবার বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে শনিবার বিকাল তিনটা। প্রায় ২৪ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস মুহূর্ত। চার বছরের শিশু জিহাদের জন্য দেশজুড়ে আকুতি। কোটি কোটি মানুষের প্রার্থনা। রাতভর নির্ঘুম মানুষের চোখ টেলিভিশনের পর্দায়। দীর্ঘ চেষ্টার পর ভোররাতে যখন ঘোষণা এলো শিশুটি পাইপে নেই তখন মানুষের চোখে মুখে বিষণ্নতার ছাপ। উৎসুক মানুষের মাঝে নানা প্রশ্ন। তাহলে জিহাদ গেল কোথায়? উদ্ধার কর্মীদের দেয়া জুস খেলো কে? পাইপ থেকে সাড়াই বা দিয়েছিল কে? এমন সব প্রশ্ন নিয়েই গতকাল দুপুর পর্যন্ত চলে জিহাদকে উদ্ধারের চেষ্টা। সকাল থেকে রেলওয়ে কলোনি মাঠে ভিড় করছিলেন হাজারো মানুষ। বেলা আড়াইটার পর ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে যখন উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয় তখন সেই পাইপ ঘিরে স্থানীয়দের জটলা। আশাহত মানুষগুলো তখনও চেষ্টা করছিলেন জিহাদকে খুঁজে পাওয়ার। সন্ধানে মেলে প্রাণবন্ত জিহাদের নিথর দেহ। তার দেহটি যখন পাইপ থেকে বের করে আনা হয় তখন সেখানে উপস্থিত হাজারো মানুষের চোখে কান্না। সাফল্যের ক্ষণটি ঢেকে যায় বিষাদে। শাহজাহানপুর থেকে জিহাদকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও উৎসুক মানুষের ভিড়। জিহাদের দেহে প্রাণের স্পন্দন আছে কিনা চিকিৎসক যখন তা পরীক্ষা করছিলেন তখন বাইরে চলছে ক্ষুব্ধ মানুষের বিক্ষোভ। চিকিৎসক বাইরে এসে যখন ঘোষণা দেন ‘জিহাদ আর বেঁচে নেই’ তখন ক্ষুব্ধ মানুষের গড়িয়ে আসে অশ্রুধারা। শুধু  রেলওয়ে কলোনি মাঠ আর হাসপাতাল নয়- জিহাদের লাশ উদ্ধারের দৃশ্য দেখেছেন সারা দেশের মানুষ, রাতভর যারা অপেক্ষায় ছিলেন জীবন্ত শিশুটিতে উদ্ধারের তারাও ধরে রাখতে পারেননি চোখের পানি।

No comments

Powered by Blogger.