১৬১ যাত্রী নিয়ে এয়ার এশিয়ার ফ্লাইট নিখোঁজ- উদ্ধার অভিযানে ইন্দোনেশিয়া-সিঙ্গাপুর

ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়ে গেছে এয়ার এশিয়ার একটি ফ্লাইট। সুরাবায়া বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের ৪২ মিনিট পর ৭টা ২৪ মিনিটে ১৬১ যাত্রীবাহী ফ্লাইট ‘কিউজেড৮৫০১’ এর সঙ্গে জাকার্তার এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিমানটি শনাক্ত করতে চলছে উদ্ধার অভিযান। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। সিঙ্গাপুরের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে অবতরনের সম্ভাব্য সময়ের এক ঘণ্টা আগে বিমানটি নিখোঁজ হয়ে যায়। এয়ার এশিয়া তাৎক্ষণিকভাবে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে তারা জানিয়েছে, বিমানটি ছিল এয়ারবাস এ৩২০-২০০ মডেলের। সুরাবায়া বিমানবন্দরের মহাব্যবস্থাপক ত্রিকোরা রাহার্হো জানিয়েছেন, বিমানে ১৫৫ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্র ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ১৬ জন শিশু এবং এক নবজাতও রয়েছে। বিদেশী নাগরিক ছিলেন ৬ জন। এর মধ্যে নবজাতক সহ দক্ষিণ কোরিয়ার তিন নাগরিক এবং সিঙ্গাপুর, বৃটেন, মালয়েশিয়া থেকে একজন করে নাগরিক। বাকিরা সবাই ছিলেন ইন্দোনেশিয়ান। দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হাদি মোস্তফা জানিয়েছেন, কালিমান্তান এবং জাভা দ্বিপপুঞ্জের মধ্যবর্তী জাভা সমুদ্রের ওপর থাকাকালীন বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানকার আবহাওয়া মেঘাচ্ছন্ন বলে তিনি উল্লেখ করেন। ইন্দোনেশিয়া কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি পৃথক অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে সিঙ্গাপুর। দেশটির বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনী দুটি সি-১৩০ বিমান নিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে। এয়ার এশিয়া স্বল্প মূল্যে সফরের সেবা দিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরেন। এয়ারলাইন্সটির ইতিহাসে এমন কোন দূর্ঘটনা এটাই প্রথম।
যাত্রাপথ পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন পাইলট
এয়ার এশিয়ার নিখোঁজ ফ্লাইট কিউজেড ৮৫০১ বাজে আবহাওয়ার কারণে যাত্রাপথ পরিবর্তন করতে চেয়েছিল। এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানটির পাইলট নিদৃষ্ট ফ্লাইট প্লান পরিবর্তনের অনুরোধ করেছিলেন। মালয়েশিয়া ভিত্তিক এয়ারলাইন্স এয়ার এশিয়া তাদের ফেসবুক পাতায় প্রকাশিক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রকাশিত বিবৃতিতে নতুন তথ্য যোগ করে তারা জানিয়েছে, বিমানটি স্থানীয় সময় ভোট ৫ টা ৩৫ মিনিটে সুরাবায়য়ার জুয়ান্দা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। ৭ টা ২৪ মিনিটে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এয়ারবাস এ৩২০-২০০ মডেলের বিমানটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর পিএক্স-এএক্সসি। বিমানটিতে পাইলট ছিলেন দুজন। চার জন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট এবং একজন প্রকৌশলী ছিলেন। প্রধান পাইলটের ৬১০০ ঘণ্টা উড্ডয়নের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর দ্বিতীয় পাইলট অর্থাৎ ফার্স্ট অফিসারের উড্ডয়নের অভিজ্ঞতা ২২৭৫ ঘণ্টার। যাত্রী ছিলেন ১৫৫ জন। এর মধ্যে ১৩৮ জন প্রাপ্ত বয়স্ক, ১৬ জন শিশু এবং একজন নবজাত। বিদেশী নাগরিকদের মধ্যে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ফ্রান্সের একজন করে নাগরিক এবং ৩ জন দক্ষিণ কোরিয়ান ছিলেন। বাকিরা সবাই ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিমানটি পূর্ব নির্ধারিত ফ্লাইট প্লানেই ছিল। বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবার আগে পাইলট খারাপ আবহাওয়ার কারণে যাত্রাপথ পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। নতুন তথ্য আসার সঙ্গে সঙ্গে তা জানানো হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.