সারা দেশে ২০ দলের হরতাল কাল

গাজীপুরে সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে ও বিএনপি’র স্থায়ী সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে সোমবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ২০ দলীয় জোট। গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দেন। আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা দ্বিতীয় হরতাল। এর আগে বিচারপতিদের অভিশংসন আইন পাসের প্রতিবাদে শুধু বিএনপির তরফে একদিন হরতাল পালন করা হয়। দেশের দ্বৈতনীতি চলছে অভিযোগ করে মির্জা আলমগীর বলেন, সরকারি দলের লোকদের জন্য এক নীতি আর বিরোধী নেতাদের জন্য আরেক নীতি। শনিবার গাজীপুরে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ মিছিল সমাবেশ করেছে। কিন্তু বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের  কোন মিছিল, সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি। বকশীবাজারে হামলার প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সরকার উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি আজিজুল বারী হেলালসহ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। ওই মামলায় গয়েশ্বর রায়কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে সরকার মিথ্যা মামলা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে মির্জা আলমগীর বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য তার নামে পাঁচটি মামলা দেয়া হয়েছে। তারেক রহমানের নামে অসংখ্য মামলাসহ সারা দেশে ২০ দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা  দেয়া হচ্ছে। এছাড়া নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নামেও মামলা দিচ্ছে সরকার। তাদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের মেয়র জি কে গউছ, রাজশাহীর মেয়র  মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, গাজীপুরের মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানের নামেও মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। সোমবার হরতালের ঘোষণা দিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, গাজীপুরে খালেদা জিয়ার সমাবেশ করতে না দেয়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ২০ দলীয় জোটের সকল রাজবন্দির মুক্তি দাবি, শনিবারের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাধার প্রতিবাদে দেশবাসীকে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। তবে সংবাদপত্র বহনকারী গাড়ি, এম্বুলেন্স, ওষুধের দোকান, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, খাবারের গাড়িসহ জরুরি সেবাপ্রদানকারী সংস্থার গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। জিহাদ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা আলমগীর বলেন, শিশু জিহাদের কূপে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় তিনি এটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। অবৈধ সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়েছেন। তার বক্তব্যে জাতি হতাশ হয়েছে। আমরা তার বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জিহাদের মৃত্যুতে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। এর আগে চেয়ারপারসন কার্যালয়ে ২০ দলের মহাসচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে জামায়াতের ডা. রিদওয়ানউল্লাহ শাহেদী, এলডিপির ড. রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব  গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আবদুল কাদের, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দারসহ ২০ দলের মহাসচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.