মেয়র আরিফ আত্মসমর্পণ করতে পারেন আজ

আত্মগোপন পর্ব শেষ করে আজ আত্মসমর্পণ করবেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জের পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া (জি কে) গউছ। দু’জনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এ এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় মেয়র আরিফ ও গউছের ওপর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঝুলছে। গত ২১শে ডিসেম্বর হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রশিদ আহমেদ মিলন এ দু’জনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করেন। তাদের সঙ্গে পরোয়ানা তালিকায় নাম রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর। হারিস চৌধুরী অনেক আগে থেকেই পলাতক। কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্তির পর থেকে মেয়র আরিফ অনেকটাই আত্মগোপনে। তখন থেকে মেয়র আরিফকে প্রকাশ্যে দেখা না গেলেও আড়ালে থেকেই চালিয়ে যেতে থাকেন সিটি করপোরেশনের কর্মকা-। বিশেষ উপায়ে ফাইলপত্রে স্বাক্ষরও দিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে আদালত কর্তৃক চার্জশিট গ্রহণ করে পরোয়ানা জারির পর থেকে আরিফ একেবারেই লাপাত্তা। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তার ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গেও। কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না তিনি এখন কোথায়। একই ভূমিকা নিয়েছেন হবিগঞ্জের মেয়র জি কে গউছ-ও। একটি সূত্রের তথ্য, আরিফ ও গউছ দু’জনে আত্মগোপনে থাকলেও তাদের নিজেদের মধ্যে একটি সমন্বয় রয়েছে। এগোচ্ছেনও একই আইনি প্রক্রিয়ায়।
মেয়র আরিফের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করতে না পারলেও তার ঘনিষ্ঠজনরা নিশ্চিত করেছেন আজই হবিগঞ্জে আদালতে উপস্থিত হয়ে আরিফ নিজেকে আইনের আশ্রয়ে সমর্পণ করবেন। সিলেট থেকে মেয়র আরিফের আস্থাভাজন কিছু সিনিয়র আইনজীবী ও শুভাকাঙক্ষীদের একটি দল আজ সকালে হবিগঞ্জ পৌঁছবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর এদিনই সুবিধাজনক কোন সময় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করবেন মেয়র আরিফ। ওই সূত্রের তথ্য, জামিন না-মঞ্জুর হলে হাইকোর্টে জামিন আবেদনের জন্যও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তিনি। অন্যদিকে, হবিগঞ্জের পৌর মেয়র জি কে গউছেরও আজ আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণের কথা। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র নিশ্চিত করেছে আজ আত্মসমর্পণের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তিনি। স্বাক্ষর করে রেখেছেন ওকালতনামায়ও।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া ২০০৫ সালের ২৭শে জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে এক গ্রেনেড হামলায় মারা যান। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দু’টি মামলা করেন। ২০০৫ সালের ১৯শে মার্চ এ মামলায় তদন্ত শেষে প্রথম চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির (সিটি জোন, উত্তর ও ঢাকা) এএসপি মুন্সী আতিক। বাদীপক্ষ আপত্তি জানালে অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২০শে জুন দ্বিতীয় দফা চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ জোন) মো. রফিকুল ইসলাম। চার্জশিটে সন্তুষ্ট না হওয়ায় আবারও আপত্তি জানান কিবরিয়া পরিবার। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে গত ১২ই নভেম্বর তৃতীয় দফা সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেসা পারুল। কিছু ভুল থাকায় সংশোধনের পর গত ২১শে ডিসেম্বর আবার চার্জশিট জমা দেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.