আসামে সেনা অভিযান জোরদার করা হবে

আসামে বিচ্ছিন্নতাবাদী বোড়োদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল দলবীর সিং সুহাগ। নয়াদিল্লিতে গতকাল শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে আসাম পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকের পর এ কথা বলেন তিনি। খবর এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার। আসামের প্রত্যন্ত শোণিতপুর ও কোকড়াঝাড় জেলার একাধিক গ্রামে গত মঙ্গলবার এক ঘণ্টা ধরে ঝটিকা হামলা চালায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অব বোড়োল্যান্ডের (এনডিএফবি) অস্ত্রধারীরা। এতে নিহত হয় অন্তত ৬৫ জন। পরে বোড়োদের ওপর পাল্টা হামলা ও উভয় পক্ষের সংঘর্ষে আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। বোড়ো উপজাতিদের জন্য আসাম অঞ্চলে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র আন্দোলন করে আসছে এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। নয়াদিল্লিতে গতকালের বৈঠকে আসামের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বৈঠক সূত্র। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ ও সেনাপ্রধান দলবীর সিংয়ের পাশাপাশি আরও উপস্থিত ছিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, কেন্দ্রীয় আদিবাসীবিষয়ক মন্ত্রী জোয়েল ওরাম, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু প্রমুখ। বৈঠক শেষে জেনারেল দলবীর সিং সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবেই অভিযান জোরদার করতে যাচ্ছি।’ আর রাজনাথ বোড়ো বিচ্ছিন্নতবাদীদের হামলার ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে বলেন,
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নেবে। রাজনাথ জানান, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কেউ কেউ হামলার পর প্রতিবেশী ভুটানে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ভুটানের সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। ‘ঠান্ডা মাথায়’ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা নয় জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার এরই মধ্যে ঘটনা তদন্তে জাতীয় তদন্ত সংস্থাকে (এনআইএ) মাঠে নামিয়েছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) ৫০টি কোম্পানিকে আসামে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আধা সামরিক বাহিনীও কাজ শুরু করেছে। তারা রাজ্যের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযান শুরু করবে। হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারগুলোর জন্য সরকার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করছে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের জন্য দুই লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সহিংসতার পর সাত হাজারের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্যের কয়েকটি অংশে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.