সুন্দরবনে কমে গেছে ডলফিন আর শুশুক

বাংলাদেশে সুন্দরবনে শেলা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে বিস্তীর্ণ এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়ার পর এই বনভূমি ও প্রাণবৈচিত্র্যের ওপর তার গুরুতর প্রভাবের আশংকা দেখা দিয়েছিল। এই এলাকাটি ছিল দুর্লভ ইরাবতী ডলফিনের একটি অভয়ারণ্য। অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন যে, তেল ছড়িয়ে এই ডলফিনের প্রাকৃতিক আবাসস্থল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে গত সাত দিনে পরিস্থিতির একটা উন্নতি হয়েছে। পশুর ও শেলা নদীর মোহনা, যেটি ডলফিনের প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। সেখানকার স্থানীয় জেলেরা বলছেন, গত কয়েক দিন ধরে তারা ডলফিন ও শুশুকের হার খুবই কম দেখছেন। তবে, তারা কোনা ডলফিন মারা যেতে দেখেননি। গবেষক জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, এই দুই নদীর মোহনা ও তার আশপাশের এলাকা ডলফিনের প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেই এটিকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। যেহেতু এরা মিষ্টি পানির ওপর নির্ভরশীল এবং এখানকার নদীর গভীরতা ডলফিনের বেচে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বন বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, করমজল ঢাঙমারী, শেলা নদী ও দুধমুখী এলাকাগুলি ডলফিনের জন্য হটস্পট, ট্যাঙ্কারডুবির পর পাঁচ দিন পর্যন্ত ঐসব এলাকায় কোনো ডলফিন দেখা যায়নি। এরপর গত দুই তিন যাবৎ আবার ডলফিন, শুশুক ও ইরাবতী ডলফিন দেখা যাচ্ছে। গবেষক জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, ভবিষ্যতে ডলফিনের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা নির্ভর করবে সেখানে কী পরিমাণ মাছ পাওয়া যাবে। অর্থাৎ ওই অঞ্চলে যদি মাছের সংখ্যা কমে যায়, তাহলে জেলেরা মাছ ধরতে নদীর আরো গভীরে যাবে, আর তাতে ডলফিনের আবাসে ডিসটার্বেন্স অনেক বেড়ে যেতে পারে। আর তার প্রভাব পড়বে ডলফিনের প্রজননের ওপর। তেলের স্তর এখন আর তেমন দৃশ্যমান নয়। কিন্তু তেল নিঃসরণের ফলে ডলফিনের দীর্ঘমেয়াদি কোনো ক্ষতি হয়েছে কিনা- তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে।
সূত্র : বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.