ফেল করা শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি হতে পারবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

যারা ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেছে, তারা মেডিকেলে ভর্তি হতে পারবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেছেন, ‘যারা ভর্তি পরিক্ষায় পাস করেনি, তাদের ভর্তি হবার সুযোগ আমি কীভাবে দেব? যারা পাস করেনি, তারা কীভাবে ডাক্তার হবে? যে ফেল করেছে তাকে ভর্তি করব, এ ধরনের মনমানসিকতার স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমি নই।’ খবর বাসসের।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরের কিডনি ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউটের দশম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হারুন-উর-রশীদের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, কিডনি ফাউন্ডেশনের মহাসচিব এম মুহিবুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, ভর্তি পরীক্ষায় ৪০-এর নিচে নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীরা বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হতে পারবেন না। প্রায় একই রকম নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলও (বিএমডিসি)।
তবে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ মালিকদের সংগঠন বিপিএমসিএ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছে। সংগঠনটি ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ২০ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার আবদার জানিয়েছে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বেসরকারি উদ্যোগে আরও হাসপাতাল হলে সরকার সহযোগিতা করবে। স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগ থাকতে হবে। সরকার বারডেম, শিশুস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশন, কিডনি ফাউন্ডেশনের মতো উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতে চায়।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে মেডিকেল শিক্ষার মান বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি না করার পরামর্শ দেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন চাই। কিন্তু “মোহনা”র মতো ভেজাল হাসপাতাল আমরা কিছুতেই চাই না।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কিডনি সংযোজনে অতীতে অনেক দালাল দরিদ্র মানুষকে প্রতারিত করেছে। এ-সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হওয়ার পথে। ২৮ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে কিডনি-সম্পর্কিত আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে আগামী জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তা পাস করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সূচনা বক্তব্যে কিডনি ফাউন্ডেশনের মহাসচিব এম মুহিবুর রহমান জানান, ২০০৩ সালে ৭০ হাজার টাকায় ধানমন্ডির একটি ভাড়াবাড়িতে ছয়টি ডায়ালিসিস মেশিন নিয়ে কিডনি ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে কিডনি ফাউন্ডেশন ১৫০ শয্যার হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। ৪৫টি ডায়ালিসিস মেশিন দ্বারা ১২০-১৩০ জন রোগী প্রতিদিন ডায়ালিসিস করার সুযোগ পাচ্ছেন। ১৬ শয্যার নিবিড় পর্যবেক্ষণকেন্দ্র ও তিনটি অপারেশন থিয়েটার রয়েছে। এ পর্যন্ত ২৯৬ জন রোগী এখানে কিডনি সংযোজন করেছেন। ২০১১ সাল থেকে ডায়ালিসিস-সেবা বাড়ি বাড়ি যেয়ে দিচ্ছে কিডনি ফাউন্ডেশন। এ পর্যন্ত ১৬১ জন এ সেবা পেয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.