এবার বিমানের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সে সিসি ক্যামেরা

সোনা চোরাচালান রোধে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থিত বাংলাদেশ বিমানের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সের ভেতরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান। পাশাপাশি কোনো উড়োজাহাজ হ্যাঙ্গারে আসার আগে থেকে মেরামত শেষে হ্যাঙ্গার ত্যাগ করা পর্যন্ত একটি সার্ভিলেন্স টিম পুরো কার্যক্রম মনিটরিং করবে। একই সঙ্গে লাগেজ তল্লাশি ছাড়া বিমানের কোনো পাইলট-কেবিন ক্রু যাতে বিমানবন্দর ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রীর সঙ্গে বিমান পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সোনা চোরাচালানের সঙ্গে বিমানের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা ও পাইলটসহ ৪ বিমান কর্মকর্তার গ্রেফতারের পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বোর্ড সদস্যরা মন্ত্রণালয়ে যান। বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এ সময় পরিচালনা পর্ষদের কাছে পুরো ঘটনাটি জানতে চান এবং এ ধরনের ঘটনা রোধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চান।
জবাবে বোর্ড চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দিন জানান, এ ঘটনার পর সোমবার পরিচালনা পর্ষদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সের ভেতরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা বসানো, প্রতিটি ফ্লাইট অবতরণের পর একটি সার্ভিলেন্স টিম উড়োজাহাজটি সরেজমিন পরিদর্শন করাসহ ফ্লাইটে থাকা সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাগেজ তল্লাশি, বিদেশে গিয়ে কেবিন ক্রুরা যাতে ৩০০ ডলারের বেশি শপিং করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন অবিলম্বে এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য বিমান পরিচালনা পর্ষদকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে সোনা চোরাচালান রোধে ভবিষ্যতে যাতে কোনো বিমানকর্মী জড়িত হতে না পারে সেজন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করারও নির্দেশনা দেন।
সন্ধ্যায় যুগান্তরকে এই বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করে বিমান চেয়ারম্যান জানান, তিনি মন্ত্রীকে জানিয়েছেন, গত ৩ মাস ধরে বিমান লাভজনক হয়ে উঠেছে। অনেক ছোট সমস্যার সমাধান করে বিমানে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে হজ ফ্লাইট চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এবার আয় করেছে ১৮৫ কোটি টাকা। অর্জনের ঠিক এমনই একটি সময়ে পাইলট, কেবিন ক্রু আর কর্মকর্তাদের স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়া বিমানকে আবারও পিছিয়ে দেবে। তবে অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত হলে সঠিক বিচারের মাধ্যমে তাদের যথাযথ সাজা নিশ্চিত করার ব্যাপারে বিমান চেয়ারম্যান মন্ত্রীকে তার দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, বিমানের একেকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন উন্নত পে-স্কেলে বেতন-ভাতা পান, তাদের চোরাচালানে জড়িত হওয়া নিতান্তই গর্হিত অপরাধ।

No comments

Powered by Blogger.